শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেছিলেন, রামনবমীর আগেই তাঁর বাড়িতে পদ্ম ফুটবে। সেই থেকেই শুরু হয়েছিল কানাঘুষো। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছিল, শুভেন্দু ও সৌমেন্দুর পথে হেঁটে বিজেপিতে যেতে পারেন শিশির ও দিব্যেন্দুও। সম্ভবত শীঘ্রই সিলমোহর পড়তে চলেছে সেই জল্পনায়। শোনা যাচ্ছে, চলতি মাসেই বিজেপিতে যোগ দেবেন দুই তৃণমূল সাংসদ শিশির ও দিব্যেন্দু অধিকারী।
গত নভেম্বরে তৃণমূলের প্রতীক ছাড়া পথে নামা শুরু করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মুখে কিছু না বললেও আচরণে বুঝিয়ে দিয়েছেন দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তাঁর। যা স্বাভাবিকভাবেই দলত্যাগের জল্পনা উসকে দিয়েছিল। এরপরই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রথম সারির নেতার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন সৌগত রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। কিন্তু তাতে লাভ কিছু হয়নি। ডিসেম্বরে ঘাসফুল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। শিবির বদলের সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যয়ের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি। এরপর থেকে লাগাতার পুরনো সহকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। বারবার বলেছিলেন, বাংলায় বিজেপিকে আনতেই হবে। দলবদলের পর শুভেন্দুকে লাগাতার আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। সেই সময় শুভেন্দু চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, বাংলার পাশাপাশি অধিকারী পরিবার ও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও পদ্ম ফুটবে।
শুভেন্দু অধিকারীর এই চ্যালেঞ্জকে গুরুত্ব দিতে নারাজ থাকলেও ওই ঘটনার পরই দায়িত্ব কমানো হয় তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর। প্রথমে তাঁকে দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়। এরপর জেলা সভাপতির পদ থেকেও সরানো হয় তৃণমূলের এই পুরনো সৈনিককে। যা স্বাভাবিকভাবেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল অধিকারীদের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের ফাটল। একের পর এক দায়িত্ব কমার পর দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন শিশির। পরবর্তীতে ছেলে অর্থাৎ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হলে কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। ভোটের মুখে তৃণমূলের একটি সভাতেও দেখা যায়নি তাঁকে। নানা অজুহাতে সভা এড়িয়েছেন দিব্যেন্দুও। পরবর্তীতে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি পদ থেকে ইস্তফাও দেন তিনি। যা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছিল শিশির ও দিব্যেন্দুর অবস্থান নিয়ে। ভোট যতই এগিয়ে আসছে জল্পনার আগুনে ঘি পড়েছে। এসবের মাঝে শোনা যাচ্ছে, ২০ তারিখের মোদির সভায় থাকবেন শিশির-দিব্যেন্দু। হাতে তুলে নেবেন গেরুয়া শিবিররে পতাকা। এবিষয়ে শিশিরবাবু বা দিব্যেন্দুবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি কর্মীরা বলছেন, চমক রয়েছে মোদির সভায়। সেই চমক অধিকারীরাই, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।