হোয়াটসঅ্যাপে ২৫ লাখের টোপ, যুবতীর থেকে লক্ষাধিক টাকা জালিয়াতির অভিযোগ

কৌন বনেগা ক্রোড়পতির লাকি ড্রয়ে ২৫ লক্ষ টাকা জেতার টোপ দিয়ে এক যুবতীর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতারকদের বিরুদ্ধে। প্রতারিত ওই যুবতীর বাবা হকারি করেন। মেয়ের বিয়ের জন্য অনেক কষ্টে সেই টাকা জমিয়েছিলেন। সেই টাকা প্রতারকরা হাতিয়ে নেওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন যুবতীর পরিবার। গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই যুবতী ও তাঁর পরিবার।

প্রতারনার অভিযোগ পেয়ে একটি কেস রুজু করেছে বর্ধমান থানা। পুলিশ যাতে টাকা উদ্ধারে উদ্যোগী হয় সেই আরজিও জানিয়েছেন ওই যুবতী। থানার এক অফিসার বলেন, কেস রুজু হয়েছে। এ ব্যাপারে সাইবার থানার সাহায্য নেওয়া হবে।

বর্ধমান শহরে ওই যুবতীর বাড়ি। তাঁর বাবা হকারি করেন। মঙ্গলবার তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। তাতে তিনি কৌন বনেগা ক্রোড়পতির লাকি ড্রয়ে ২৫ লক্ষ টাকা জিতেছেন বলে জানানো হয়। তাঁকে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়। সেই নম্বরে ফোন করার জন্য বলা হয় তাঁকে। পরেরদিন সকালে তিনি সেই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন। তাঁকে টাকা পাওয়ার জন্য প্রসেসিং ফি বাবদ ৮ হাজার ১০০ টাকা দিতে বলা হয়। কারণ জানতে চাইলে তড়িঘড়ি টাকা জমা না দিলে পুরস্কার হাতছাড়া হয়ে যাবে বলে জানানো হয় তাঁকে।

২৫ লক্ষ টাকা হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে প্রতারকদের দেওয়া অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা জমা করেন যুবতী। পরে তাঁকে বলা হয়, সরকার নতুন নিয়ম করেছে। সেই অনুযায়ী, প্রতি ১ লক্ষ টাকায় ১ হাজার টাকা কর বাবদ জমা দিতে হবে। সেইমতো তাঁকে ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে বলা হয়। তাঁকে আরও একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়। সরল বিশ্বাসে সেই টাকাও অ্যাকাউন্টে জমা করেন তিনি। এরপর নানা অছিলায় তাঁকে আরও টাকা কয়েকটি অ্যাকাউন্টে জমা করতে বলা হয়।

একদিকে পুরস্কার জেতার লোভ, অন্যদিকে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক হাজার জমা করায় প্রতারকদের দাবিমতো তিনি মোট ১ লক্ষ ৮ হাজার ১০ টাকা জমা করেন। প্রতারকরা তাঁকে ব্যাংকে তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ে গিয়েছে বলে জানায়।

এরপর ব্যাংকে গিয়ে যুবতী জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে কানা কড়িও জমা পড়েনি। বিষয়টি জানার পর তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। যুবতী বলেন, অনেক কষ্টে আমার বিয়ের জন্য বাবা টাকা জমা করেছিলেন। ২৫ লক্ষ টাকা পাবো ভেবে টোপ গিলে প্রতারকদের কথামতো টাকা জমা করেছি। এখন বুঝতে পারছি, পুরোটাই জাল। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। পুলিস টাকা উদ্ধার করতে পারলে বেঁচে যাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.