একটি আশঙ্কা : পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির তৃণমূলিকরণ

আমরা বামফ্রন্টের শাসনকাল দেখেছি। তাদের ক্যাডার তৈরি হতো অত্যন্ত অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে। তারা নির্বাচনে দাঁড় করাতো এমন ব্যক্তিদের যাদের দলের প্রতি নিষ্ঠা ও আনুগত্য ছিল প্রশ্নাতীত। আমার মনে হয় ৩৪ বছর একটানা শাসন ক্ষমতায় থাকার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। যদিও শেষের পাঁচ বছর তারা ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করেছে এবং তার ফলও হাতে হাতে পেয়ে গেছে।
এরপরই ক্ষমতায় এল তৃণমূল। তৃণমূল ক্ষমতার স্বাদ পেতে শুরু করে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরেই। সেই নির্বাচনে তৃণমূল একটি আসন থেকে ২২টি আসন পেয়ে যায়। আজকের বিজেপির সঙ্গে বিষয়টি মিলে যাচ্ছে। শুরু হয় বেনো জলের প্রবেশ। মনে রাখতে হবে, বন্যার জল কখনোই পানের উপযোগী হয় না। সেটাকে পানের উপযোগী করে তুলতে হলে যে পরিমাণ পরিশোধন করতে হয় তা খাজনার চেয়ে বেশি বাজনার শামিল। ফলত যা হবার তাই হয়েছে। কিছু সুযোগসন্ধানী কংগ্রেসি, কিছু কমিউনিস্ট এবং কিছু বিজেপি নেতা তৃণমূলে যোগদান করে। আবার কিছু নেতাকে ভয় ও লোভ দেখিয়ে তৃণমূলেশামিল করা হয়। এতে সাময়িক লাভ হয়েছে নিশ্চিত, কিন্তু বিষয়টিকে সাধারণ মানুষ মোটেও ভালো ভাবে নেয়নি।
যিনি ছিলেন সততার প্রতীক, মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে তিনি হয়ে উঠলেন তোলাবাজ ও সিন্ডিকেটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তিনি বিষয়গুলি বুঝতে পারেননি এমনটা আমার মনে হয় না। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কিন্তু একইসঙ্গে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে গেছিলেন। চারিদিকে স্তাবক পরিবৃত হয়ে পড়েছিলেন এবং দলে একটাই পোস্ট এবং বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট করে রেখেছিলেন। সাধারণ সমর্থকরা তাকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাদের তিনি বিরোধী ভেবেছিলেন। ফল তিনি হাতেগরম পেয়েছেন। তার সম্পর্কে দুটি উক্তি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। অরুণাভ ঘোষ বলেছেন, “তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সিড়ি বেয়ে উঠেছেন এবং লিফটে করে নামছেন।” ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেছেন, “তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) হলেন সিপিআইএম-এর সুযোগ্য ছাত্রী।” সিপিআইএম যেখানে শেষ করেছিলেন তৃণমূল সেখান থেকেই শুর করেছে। (তৃণমূলিদের নিয়ে বিজেপি ভর্তি করলে আবার এখান থেকেই বিজেপি রাজ শুরু হবে)। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার বছর। খানেকের মধ্যেই শুরু হলো তোলাবাজি। বিধবা ভাতা থেকে একশো দিনের কাজ, রাস্তা সারাই থেকে ব্রিজ নির্মাণ কিছুই বাদ যায়নি। সর্বত্র তোলাবাজি ও সিন্ডিকেটরাজ। কারণ যারা এই দলে এসেছিলেন তারা প্রায় সকলেই করেকম্মে খাবার জন্যেই এসেছিলেন। মমতা। বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূলে। এসেছে এমন লোক খুব বেশি নেই। যার ফলে সিপিআইএম যেমন চুষে খেয়েছিল এরা সেখানে কামড়ে ও গিলে খাওয়া শুরু করলো। সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেন। অথচ মানুষ তৃণমূলকে দু’হাত উজাড় করে দিয়েছিলেন। ২০০৯, ২০১১, ২০১৪ ও ২০১৬ সালের লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফল দেখলেই বুঝতে পারা যায়। এই নির্বাচনগুলোতে খুব ছাপ্পা বা অনৈতিকভাবে তৃণমূল জিতেছে এমন অভিযোগ খুব বেশি নেই। সেখান থেকে কী এমন ঘটনা ঘটলো যে ২০১৬-র নির্বাচনে বিপুল সাফল্যের পর দু’বছরের মধ্যে ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি সাধারণ মানুষের উপর আস্থা রাখতে পারলেন না।৩৭ শতাংশ আসনে প্রার্থী দাঁড়াতে দিলেন না এবং বাকিটাতেও ছাপ্পা মেরে দখল করলেন। এবং বিরোধীপক্ষের জয়ী সদস্যদের ভয় দেখিয়ে ও প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে নিজ দলে শামিল করালেন? একটু পর্যবেক্ষণ করলেই কারণটা স্পষ্ট হয়ে যায়। নেতাদের একটা বড়ো অংশ সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ হারিয়েছেন। দ্বিতীয়ত বড়ো নেতাদের একটা বড়ো অংশ পারিবারিক সূত্রে নেতা হয়েছেন। কোনোদিনই তাদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগ ছিল না। আর তারা বুঝে গেছিলেন সময় খুব বেশি নেই, যে যত পারো আখের গোছাও। স্বাভাবিক ভাবেই আখের গোছানোর প্রতিযোগিতা শুরু হলো এবং প্রতিযোগিতা যত তীব্র হলো সাধারণ মানুষের জীবন ততটাই হয়ে উঠলো দূর্বিষহ। আর এই নেতারা আখের গোছানোয় মনোনিবেশ করল কারণ তাদের সামনে না ছিল কোনো উচ্চ আদর্শ, না ছিল আরও বড়ো কোনো লক্ষ্য।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার অব্যবহিত পরেই তৃণমূল সিপিআইএম পরিচালিত প্রাম পঞ্চায়েতগুলি ভাঙিয়ে নিতে শুরু করে। এর পর পঞ্চায়েত সমিতি, পুরসভা ও জেলাপরিষদ। যার সফলতম কদর্য প্রকাশ আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদ। যেখানে তৃণমূল একটি মাত্র আসন পেয়েছিল। কেশব চন্দ্র সেন একবার দুঃখ করে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে বলেছিলেন যে তার সংগঠনটা ভেঙে যেতে বসেছে। এর উত্তরে পরমহংসদেব বলেছিলেন লোক পরখ করে না নিলে এমনই হবে। আর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরখ করা মানে তার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া নয়। তার শৈশব থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত কার্যকলাপ আতস কাচের নীচে রেখে পরীক্ষা করা। মৌখিক পরীক্ষার কথা উল্লেখ করলাম তার কারণ সম্প্রতি একজন তৃণমূল বহিষ্কৃত আধা নেতা বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সামনে আর এস এস-এর প্রার্থনা ১৫ দিনের প্রচেষ্টায় মুখস্থ করে উপস্থাপন করে তার মন জয় করে নেয় বলে খবর। তিনি সাংসদ পদপ্রার্থী ছিলেন। সেকারণেই পরখটা কষ্টিপাথরেই যাচাই করা প্রয়োজন। এমন (এখানে উল্লেখিত নব্য বিজেপি) ব্যক্তির নিকট থেকে ভালো কিছু আশা করা উচিত নয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে এমন রাজনীতিবিদ কম আছেন যিনি নিজের ক্যারিশ্মায় দলের ছত্রছায়া ছাড়া একটি জেলা পরিষদ আসন জেতার ক্ষমতা রাখেন। তাহলে অন্য দল থেকে নেতা ভাঙিয়ে আনার এত আগ্রহ কেন? নিজের দল ভারী করা নয়তো? মোদীজী একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, “আমি একা দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবো না।” দল যদি অন্য দলের বাতিল ও অত্যাচারী নেতাদের নিয়ে দলের বোঝা বাড়িয়ে চলে তাতে বিজেপির আদর্শ ও লক্ষ্য উভয়ই ব্যাহত হবে।
বিজেপির কাকে দরকার? বিজেপিতে প্রয়োজন সাধারণ মানুষের। আমরা কিরণ বেদীকে দেখেছি। আমরা ভারতী ঘোষ, অনুপম হাজরাকেও দেখলাম। যাঁরা শোষিত, অত্যাচারিত, বঞ্চিত তাঁরা দু’হাত তুলে বিজেপিকে আশীর্বাদ করেছেন। এতবুথ জ্যাম, ছাপ্পা, সন্ত্রাসের পরেও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি আসন পেল। এই সংখ্যা ২৫ হলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। কারণ সাধারণ মানুষ চাইছে বিজেপিকে। এই পরিস্থিতিতে তাড়াহুড়ো করে তৃণমূল বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার ফেলতে চাইলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বিশেষ করে জেহাদি মানসিকতার লোকগুলিকে দলে শামিল করলে। এই জেহাদি নেতাটির বিরুদ্ধেই বীরভূমের মানুষ দুধকুমার মণ্ডলকে ভোট দিয়েছেন। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বীরভূমের ভোটারদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হবে। এটি মোটেই দল হিসেবে বিজেপির পক্ষে সুখকর হবে না।
১। তৃণমূলকে ফেলতে গিয়ে যে বিধায়ক বা জনপ্রতিনিধি বা নেতাদের বিজেপিতে নেওয়া হচ্ছে তারা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। এরা সুযোগসন্ধানী ইঁদুরমার্কা নেতা। জাহাজে জল ঢুকলে যেমন প্রথমেইদুর পালায় তেমনি।
২। এই নেতাদেরই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষ বিজেপিকে আশীর্বাদ করেছে। আবার যদি সেই চেনা মুখ নতুন জামায় সজ্জিত দেখে তাহলে সাধারণ মানুষ নিশ্চিতভাবেই বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। লাভ হবে মৃতপ্রায় সিপিআইএম-এর।
৩। তাড়াহুড়োয় কিছু তৃণমূল এম এল এ-কে দলে নিয়ে সরকারটা ফেলে দিতে চাইলে বিজেপি-কে আটকানোর জন্য কংগ্রেস ও সিপিআইএম তৃণমূল সরকারকে সমর্থন করবে বলেই আমার বিশ্বাস। এমন ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বড়ো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এবছর সিপিআইএম-এর ভোট বিজেপিতে (ট্রান্সফার হয়েছে) পড়েছে। একটু ধৈর্য ধরে সংগঠন করলে এই ভোটটাই বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক হয়ে উঠবে।
কথাগুলি বিজেপি নেতাদের হয়তো ভালো লাগবে না। মনোবেদনা থেকেই কথাগুলি লিখতে হচ্ছে। অনেকটা ঋষি অরবিন্দ যে কারণে নিঃস্বার্থভাবে ভালো বুঝে গান্ধীজীকে সাইমন কমিশনকে মান্যতা দিতে অনুরোধ জানিয়েছিল তেমনই। আরো কিছু বক্তব্য তুলে না ধরলে বিষয়টি সম্পূর্ণ হয় না।
বিজেপির তৃণমূলিকরণের সূত্রপাতমুকুল রায়ের হাত ধরে হয়েছিল। তিনি অত্যন্ত ধুরন্ধর পারদর্শী রাজনীতিবিদ সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি দীনদয়ালজীর একাত্ম মানবদর্শন আত্মস্থ করে বিজেপিতে যোগদান করেছেন বলে মনে হয় না। তার একটা রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রয়োজন ছিল। আবার একইভাবে বিজেপির একজন ধুরন্ধর বাঙ্গালি রাজনীতিবিদ দরকার ছিল। উভয়ে উভয়কে ব্যবহার করেছেন এবং করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্বকে তাদের আদর্শ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ভুললে চলবে কেন? তিনি এখন প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছেন। জ্বলাই স্বাভাবিক। কারণ যে দলটা তিনি নিজে হাতে গড়ে তুলেছিলেন সেখান থেকে তিনি নিজেই ব্রাত্য হয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তাই তিনি তৃণমূল ভাঙার খেলায় মেতে উঠবেন তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-বিজেপির মাথায় যাঁরা রয়েছেন তাদের ভাবতে হবে কাদের নেওয়া ঠিক হবে, কাদের নয়। যারা বিজেপি কর্মীদের উপর এবং সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণের বুলডোজার চালিয়েছে তাদের নেওয়া হলে বিজেপির জনপ্রিয়তা অতি দ্রুত তলানিতে নেমে যাবে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কারণে সাধারণ বিজেপি কর্মীদের মনে ধূমায়িত অসন্তোষ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। অন্য দল থেকে আসা নেতারা কিন্তু পরীক্ষিত নয়, যেখানে সাধারণ বিজেপি কর্মীরা বহুভাবে পরীক্ষিত। তাদের নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার কিছু নেই।
বিজেপির রাষ্ট্রীয় কার্যকর্তারা মূলত হিন্দিভাষী অঞ্চলের রাজনীতিটা খুব ভালো বোঝেন। পূর্ব ও দক্ষিণ ভারত তারা এখনও রপ্ত করে উঠতে পারেননি। একইভাবে দক্ষিণবঙ্গের নেতারা উত্তরবঙ্গটাকে ঠিকমতো চিনে উঠতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। দক্ষিণবঙ্গে সাংগঠনিক কাঠামো ততটা শক্তিশালী নয়, যতটা উত্তরবঙ্গে হয়েছে। তার প্রমাণ এবারের নির্বাচনে সবাই পেয়েছেন। উত্তরবঙ্গে ৮-এ ৭টিই বিজেপির দখলে এসেছে। সে কারণে দক্ষিণবঙ্গে কোনো তথাকথিত হেভিওয়েট নেতার প্রয়োজন হলেও উত্তরবঙ্গে সংগঠনের কারণে তার প্রয়োজন হয় না। যেটা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বোঝানো কঠিন। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে কিছু তৃণমূলি গুন্ডা নেতার নাম ভাসছে, যারা নাকি বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে দিল্লিতে যোগাযোগ করছে এবং কিছুদনের মধ্যে তারা বিজেপিতে যোগদান করবে। যদিও ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি আমার বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। আমার প্রশ্ন, সাধারণ কর্মীরা যদি সেই নেতাদের বাদ দিয়েই বিজেপিকে জেতাতে পারে তাহলে ভালো ফলের পরে সেই অত্যাচারী নেতাদের দলে নেওয়ার কি খুব প্রয়োজন আছে? কোচবিহারের একজন নেতা যিনি এক সময় তার পিতার দৌলতে ফরোয়ার্ড ব্লক করতেন। পরবর্তীতে তৃণমূলের অত্যাচারী নেতাদের মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠেন, তার অত্যাচারে সাধারণ বিজেপি কর্মীরা মিথ্যা মামলা ও চিকিৎসায় জরাজীর্ণ। বাস্তুচ্যুত। তাকে বিজেপিতে নেওয়া হলে মৃতপ্রায় সিপিআইএম কোচবিহার জেলায় পুনর্জীবন পাবে। একইরকমভাবে আলিপুরদুয়ার জেলায় যে কজন (৫/৬ জন) বিজেপির প্রতি খঙ্গহস্ত ছিল তারা নাকি বিজেপিতে যোগদানের জন্য উপরতলায় যোগাযোগ করছে। বিজেপিতে তাদের স্থান হলে আলিপুরদুয়ারের মতো জেলায় বিজেপি তৃতীয় স্থানে পৌঁছে যাবে।
রাজনীতিতে দলবদল নতুন নয়। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে একটি দল ভেঙে সমস্ত অচল নেতা আরেকটি (বিজেপি) দলে আশ্রয় নিলে নেতাদের অতীতের খারাপ কাজের দায় ও দুর্নাম দুটোই নতুন দলকে নিতে হবে। এটা বিজেপির পক্ষে সুখের ও শুভ কখনোই হবে না।
অতএব সাধু সাবধান। ‘দিল বড়ো করলে দল বড়ো হবে’ নিশ্চিত। কিন্তু বিষবাষ্পে ভরে উঠলে দীনদয়ালজীর আদর্শ রক্ষিত হবে তো? মনে রাখতে হবে, বন্যার পূর্বভাস পেলেই প্রথম যে জিনিসটা মজুত করতে হয় তা হলো পানীয় জল। কারণ বন্যায় চারিদিকে জল থৈ থৈ হলেও তা পানের উপযোগী থাকে না।
আশা করি আসন্ন বন্যার পূর্বাভাস বিজেপি পেয়েছে এবং তারা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে পানীয় জল সঞ্চয়ে মনোনিবেশ করেছে। অন্যথায় ডায়েরিয়া, জন্ডিস এমনকী হেপাটাইটিসও হতে পরারে।
পরিষেশে বলি এটা আমার ব্যক্তিগত আশঙ্কা মাত্র। একজন সাধারণ দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসাবে যা দেখছি তাই লিখলাম। আমি রাজনৈতিক বিশ্লেষক বা কেউকেটা নই। সাধারণ বিজেপি সমর্থক। এবং তা আদর্শগত কারণেই। ভগবানের কাছে প্রার্থনা, আমার এই ভাবনা বা পর্যবেক্ষণ ভুল প্রমাণিত হয়ে আগামীতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নেতৃত্বে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।
বীথিকা দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.