ইদানীং তৃণমূলের বেশ কিছু মিটিং-মিছিলে ডিজে বাজছে! ‘খেলা হবে’ গান চালিয়ে কোথাও কোথাও উদ্দাম নাচছেন কর্মী সমর্থকরা। তা ছাড়া দু’দিন আগেও দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, খেলা তো হবেই। জেতাও হবে!
নয়াদিল্লির সাত নম্বর লোককল্যাণ মার্গে বসে সেসবের উপর যেন তীক্ষ্ণ নজর রেখে চলছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর আজ, রবিবাসরীয় ব্রিগেডে সেই ‘খেলাতেই’ নতুন ট্যুইস্ট দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, “দিদির ঘুম চলে গেছে। ভয় পেয়েছেন। তাই ইদানীং খুব বলছেন, খেলা হবে খেলা হবে। আরে দিদি, আমি জানি তো আপনারা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। অনেক খেলেছেন। কোথায় কোথায় না খেলেছেন। গরিবের টাকা লুঠ করেছেন, খেলতে খেলতে আমফানের টাকাও লুঠ করেছেন। কিছু ছাড়েনি। এত দুর্নীতি করেছে যেন বাংলায় দুর্নীতির অলিম্পিক হয়েছে!”
বাংলায় বিকল্প উন্নয়নের মডেল তুলে ধরতে এদিনের সভায় দীর্ঘ সময় নেন মোদী। উন্নয়নের ব্যাপারে তাঁর ভাবনার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু তার পরেই চোখা আক্রমণ করেন মমতাকে। বলেন, “আপনাকে দিদি ভেবে সবাই বাংলায় পরিবর্তন এনেছিল। কিন্তু আপনি কেন কেবল একজনেরই পিসি হয়ে থেকে গেলেন! কেন শুধু একটি ভাইপোর লালসার পূরণ করতেই সময় কাটিয়ে দিলেন!”
আরও পড়ুন: ব্রিগেডে মিঠুনের নতুন ডায়লগ, ‘এক ছোবলেই ছবি, কাউকে আপনার অধিকার ছিনিয়ে নিতে দেবেন না’
এর পরই স্বর উঁচু করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক খেলা হয়েছে। এ বার তৃণমূলের খেলা শেষ, খেল খতম, উন্নয়নের কাজ শুরু হবে। তাই বাংলার মানুষকে বলছি ভয় পাবেন না, নির্ভয়ে বিজেপিকে ভোট দিন। তাতে বাংলায় জয় হবে ভারতের জয় হবে।”
বাংলায় বাম ও কংগ্রেসের নেতারা বরাবরই বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কারণে বাড় বৃদ্ধি হয়েছে বিজেপির। অধীর চৌধুরীদের কথায়, মমতাই বাংলায় বিজেপিকে এনেছেন। তাঁদের সঙ্গে বক্তব্যের তফাত থাকলেও প্রধানমন্ত্রীও এদিন স্পষ্টতই বলেন, তৃণমূলের কারণেই বাংলায় বিজেপি বাড়ছে। তাঁর কথায়, দিদি আপনারা যে দুর্নীতির পাঁক তৈরি করেছেন, সেজন্যই তো পদ্ম ফুটছে বাংলায়।
তাঁর কথায়, “আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে, “কেউ যদি ভয়ে হতাশায় রেগে যায়, তা হলে তাঁর মতিভ্রম হওয়া শুরু হয়। রেগেমেগে আমাকেও কী না কী বলা হচ্ছে। কখনও রাবণ বলছে, কখনও দানব, কখনও দৈত্য কখনও গুন্ডা।” তার পর ফের গোটা গোটা বাংলায় বলেন, “আরে দিদি এত রাগ কেন? রাগ কেন দিদি? কথায় কথায় গাল দেওয়া! এত রাগ কেন দিদি!”
সেই সঙ্গে বলেন, বাংলায় পদ্ম ফুটছে, কারণ আপনারা পাঁক তৈরি করেছেন। বাংলায় জাতপাতের বিভাজন করেছেন, দুর্নীতিকে, তোলাবাজ, সিন্ডিকেট রাজকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। সেই কারণেই বিজেপি বাড়ছে।
বিধানসভা ভোট ঘোষণার পর বাংলায় এদিন প্রথম সভা হল প্রধানমন্ত্রীর। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল ব্রিগেড ময়দানও। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত যদি কোনও পরিবর্তন না হয়, তা হলে দশ বারো দিনের মধ্যে ফের বাংলায় প্রচারে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পরের সভা হতে পারে ১৮ তারিখ।