ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর প্রথমবার বাংলায় এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অর্থাৎ নিখাদ রাজনৈতিক প্রচারের জন্যই তাঁর ঝটিকা বঙ্গ সফর। মূলত তিনিই ভোটমুখী বাংলায় চুরান্ত প্রচারের সুর বেঁধে দেবেন। আর ব্রিগেড মাঠে বিশাল জনসমুদ্র দেখে আপ্লুত মোদি ‘আসল পরিবর্তনের’ ডাক দিলেন। তিনি নিজের ভাষণে এই আসল পরিবর্তনের ব্যাখ্যাও দিলেন। পাশাপাশি অকপটে স্বীকার করলেন, তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এত জনসমুদ্র কখনও দেখেননি। নরেন্দ্র মোদি বললেন, বাংলার মানুষ পরিবর্তনের জন্য কখনও আশা ছাড়েননি। পরিবর্তনের জন্য মমতাদিদির উপর ভরসা করেছিলেন বাংলার মানুষ। কিন্তু মমতাদিদি এবং তাঁর ক্যাডাররা বাংলার মানুষের ভরসা ভেঙেছেন। এই লোকেরা বাংলার মা-মেয়েদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। কিন্তু বাংলার মানুষের উদ্দীপনা কমাতে পারেননি। এরপরই রীতিমতো বাংলায় বলেন, ‘বাংলা চায় উন্নতি, বাংলা চায় শান্তি, বাংলা চায় প্রগতিশীল বাংলা, বাংলা চায় সোনার বাংলা’।
প্রধানমন্ত্রী এদিন আসল পরিবর্তনের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নিজের ভাষণে। তিনি বলেন, আমি এই ব্রিগেড গ্রাউন্ড থেকে আসল পরিবর্তনের জন্য ভরসা দিতে এসেছি। বাংলার উন্নতি, স্থিতি বদল, বাংলার পুনর্নির্মাণ, সংস্কৃতির রক্ষা, শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের জন্যও ভরসা দিতে এসেছি। কৃষক, যুব, শিল্পোদ্যোগী, মা-বোনেদের উন্নতির জন্য ২৪ ঘণ্টা, দিনরাত পরিশ্রম করব আমরা। পরিশ্রম করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখবে না বিজেপি। প্রতিটা সেকেন্ড আপনাদের জন্য বাঁচব আমরা। আপনাদের সেবা করব, আশীর্বাদ নেব। শুধু নির্বাচনের জন্য আপনাদের হৃদয় জিততে থাকব এমনটা নয়। বিজেপির সরকার তৈরি হবে বাংলায়, তার নীতি ও সিদ্ধান্ত হবে বাংলার মানুষের হিতই অগ্রাধিকার পাবে। এদিন নরেন্দ্র মোদি বলেন, আসল পরিবর্তন মানে গরিবরাও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। আসল পরিবর্তন মানে সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে। আসল পরিবর্তন মানে আদিবাসী, দলিত, পিছড়ে বর্গ, শোষিত, বঞ্চিত ও শরণার্থী ভাইরা সমান সুযোগ পাবেন। আসল পরিবর্তন মানে কোনও তোষণ হবে না। আসল পরিবর্তন মানে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। এরপরই মোদি বলেন, উত্তরবঙ্গ হোক বা দক্ষিণবঙ্গ, পশ্চিমাঞ্চল হোক বা জঙ্গলমহল সবার জন্যই উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়া। আমরা কথা লিখে রাখুন। বাংলার উন্নতির জন্য আগামী ২৫ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই পদক্ষেপের প্রথম ধাপ হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই এবার বাংলার সরকার তৈরির জন্য ভোট দেবেন না, বাংলার উন্নতি, বাংলাকে নয়া উচ্চতায় পৌঁছানোর জন্য ভোট দেবেন। ২০৪৭ সালে দেশের স্বাধীনতার ১০০ তম বর্ষে আবারও দেশের সেরা হয়ে উঠবে বাংলা।