‘চিন নয়, ভারতের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক চায় কাঠমান্ডু’, বার্তা নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর

গতবছর চিনের উসকানিতে ভারতের সঙ্গে মানচিত্র বিবাদে জড়িয়েছিল নেপাল (Nepal)। পাহাড়ি দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি কার্যত খোলা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন নয়াদিল্লিকে। কিন্তু তারপর পালটেছে সমীকরণ। কাঠমান্ডুর উপর লাগাতার চাপ বাড়িয়েছে ভারত। পাশাপাশি, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরে চলা কলহের জেরে অবস্থান পালটেছেন ওলি। এহেন পরিস্থিতিতে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই সাফ জানিয়েছেন, তাঁর দেশে চিনের প্রভাব বাড়ছে। তবে ভারতের জায়গা কেউ নিতে পারবে না।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য দিল্লি এসেছেন ভট্টরাই। চিনের উসকানিতে ভারত ও নেপালের মধ্যে সম্পর্কে যে তিক্ততা এসেছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দিল্লিতে অনেকেই মনে করেন, নেপাল চিনের প্রতি ঝুঁকে। এই ধারণা সঠিক নয়। ঐতিহাসিক ভাবে আমরা কিন্তু ভারত-ঘনিষ্ঠ। চিনও আমাদের বন্ধু, কিন্তু ওদের সঙ্গে আমাদের আদানপ্রদান অনেক কম। হ্যাঁ, চিনের প্রভাব বেড়েছে। তবে ভারতের জায়গা কেউ নিতে পারবে না।” কালাপানিতে ভারত-নেপাল সীমা বিবাদ নিয়ে এদিন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যা হয়েছে, তা ঠিক নয়। দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। কীভাবে তা তৃতীয় কোনও পক্ষের জন্য ধাক্কা খেতে পারে? আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। তাই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় না রাখলে রাজনৈতিক ভাবে নেপাল স্থিতিশীল হতে পারবে না।”

উল্লেখ্য, নেপালে (Nepal) তুঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা। অন্য মাত্রা পেয়েছে শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ কলহ। প্রচণ্ড বনাম ওলি সংঘাতে রীতিমতো বিপর্যস্ত সরকারি কাজ। এহেন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ক্ষমতা ত্যাগ করতে নারাজ ‘কেয়ার টেকার’ প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। গত ২০ ডিসেম্বর জরুরি বৈঠক ডেকে সরকার ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন কেপি শর্মা ওলির মন্ত্রিসভার সদস্যরা। সাত জন মন্ত্রী পদত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারি (Bidya Devi Bhandari)’র কাছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। এরপরই তাতে সায় দিয়ে সংসদ ভেঙে আগামী নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয় নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারির অফিস থেকে। তারপরই সুপ্রিম কোর্টে জাতীয় সংসদ খারিজের জন্য জারি করা বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হলফনামা জমা দেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কৃষ্ণ প্রসাদ ভাণ্ডারি। এরপরই একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলা এই সংক্রান্ত মামলাকে নাটক বলে কটাক্ষ করেন নেপালের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী ওলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.