পশ্চিমবঙ্গে বেজে গিয়েছে নির্বাচনের দামামা। বাংলা জয়ে একের পর এক সভা, মিছিল করে চলেছে বিজেপি। এহেন পরিস্থিতিতে চলতি মাসেই বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দি ঘুরে আসতে চান প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই জন্ম মতুয়া ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের। তাঁর পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরেরও জন্মস্থান ওড়াকান্দি।
বাংলাদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাতে টুঙ্গিপাড়া যেতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। আর তখনই ওড়াকান্দি যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যন্ত এই গ্রামে একটি মন্দির রয়েছে, যা মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদার তীর্থস্থান হিসেবে গণ্য হয়। মোদি সেখানে গিয়ে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদকে প্রণাম করে এলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া-ভোট টানা বিজেপির পক্ষে সহজ হবে বলে মনে করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগেই বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় মোদির সফরের পরিকল্পনার ব্যাপারে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে এই সফর সম্পর্কে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট এক ভারতীয় আধিকারিক মোদির টুঙ্গিপাড়া সফরের পরিকল্পনা নিশ্চিত করলেও, বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ভারতীয় ওই আধিকারিক বলেন, “যদি সবকিছু ঠিকঠাক চলে, তবে তাঁর টুঙ্গিপাড়া সফরের জোরাল সম্ভাবনা রয়েছে।” উভয়পক্ষের অধিকারিকরা জানান, ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা পৌঁছবেন এবং পরের দিন তিনি দেশে ফিরে যাবেন। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রথমদিনের উৎসবে যোগ দেবেন। পরের দিন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে (CAA) মতুয়াদের নাগরিকত্বের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোকসভায় এই সম্প্রদায়ের ঢালাও ভোট পেয়েছে বিজেপি। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচিত হয়েছেন হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের উত্তরসূরি শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু তার পরে করোনা-সহ একাধিক কারণে বিষয়টি আপাতত ঠান্ডা ঘরে। এর ফলে ক্রমে ক্ষোভ বাড়ছে মতুয়াদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। মানুষের ক্ষোভের কথা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি বনগাঁ-গাইঘাটায় সভা করে এলেও নাগরিকত্ব প্রশ্নের জবাব মতুয়ারা পাননি। তাই এবার রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশে মতুয়া-তীর্থ দর্শনে যেতে পারেন মোদি।