‘এই জয় জনগণের জয়।’ ভোট যুদ্ধ জেতার পর এটাই বেশিরভাগ নেতাদের মুখে খুব চেনা বাক্য সমন্বয়। বঙ্গবিজেপি রাজ্যে ভালো ফল করে একই কথা বললেও ভিতর ভিতর বাজছে অন্য কথা, ‘জয় ডব্লু ডব্লু আইডিয়ার’ জয়।
একটু সহজ করে দেওয়া যাক, আইটি সেলের সাফল্য ইজ ইক্যুয়াল টু বাংলায় বিজেপির ১৮টি আসন প্রাপ্তি। তাদের আইটি সেল দিন রাত এক করে খেটেছে রাজ্যে কমলা ঝড়ের জন্য। ফল মিলেছে হাতেনাতে। বিরোধীরা সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে।
একটু যদি সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে নজর রাখা তাহলেই চিত্রটা খুব সহজ হয়ে যাবে। তৃণমূলের যে সমস্ত নেতারা রয়েছেন তারা অনেকেই এখনও ফেসবুক বিষয়টি সম্পর্কে বিশেষ ওয়াকিবহাল নন। অনেকেই ভোটের কিছু আগে নিজেদের ফেসবুক পেজ খুলেছেন সেখানে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের চেনা মুখ যারা তারা অনেক আগে থেকেই সোশ্যাল মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই বেশি অ্যাক্টিভ। তাদের ভক্তদের যে সব যে সব পেজ এবং গ্রুপ রয়েছে তার সংখ্যাও প্রচুর।
এই সব কিছুর মূলে আইটি সেল। ২০১৪ সাল থেকেই মূলত ইন্টারনেটে প্রচারের জন্য তারা জোর দিয়েছে দেশ জুড়ে। ফল ক্ষমতায় এসেছিল মোদী সরকার। বাংলায় তখনও দাগ না কাটতে পারলেও এবারে এক্কেবারে হাতেনাতে ফল। বিরোধীদের প্রায় চিতপটাং করে বাংলায় ১৮ টি আসন পদ্ম শিবিরে।
বঙ্গ বিজেপি’র আইটি সেলের মাথায় বসেছিল রতন ধালি, সুজিত কুল, দেবাসিস বিশ্বাস, রাহুল মৃধা এবং কমলেশ। এই পাঁচজন দিন রাত এক করে বিজেপির নির্বাচনী প্রচার ইস্যুগুলিকে এক্কেবারে গুলিয়ে খাইয়েছে বলা চলে। ফলে যে ছোঁড়া কিছুদিনও কেষ্ট ঠাকুরেই সন্তুষ্ট ছিল সেই এখন মাঝে মাঝেই বলে উঠছে ‘জয় শ্রী রাম’।
বিজেপি’র আইটি সেলের সদস্য সংখ্যা দেখলে মাথা ঘুরে যেতে পারে। সুশাসন সংকল্প বিজেপি বিকল্প এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার। নরেন্দ্র মোদী সেনা গ্রুপের সদস্য ৭৪ হাজার , আরএসএস গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ২১ হাজার , হিন্দু সংগঠনে সদস্য সংখ্যা ১৮ লক্ষ, শক্তিশালী বিজেপি শক্তি ভারতের সদস্য ২৬ হাজার, বিজেপি ওয়েস্ট বেঙ্গলের সদস্য ১০ হাজার। এই আইটি সেলই বানিয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও এবং মিম। এর ফল মিলেছে হাতে গরম।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালেই বিজেপি তাদের বাংলার আইটি সেলকে ঢেলে সাজার উদ্যোগ নেয়, যা রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপির সদর দফতর ৬ মুরলীধর সেন লেন থেকে দক্ষিণ কলকাতায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বর্গ ফুটের একটি অফিস নিয়ে গিয়ে কাজ করেছে আইটি সেল। আর বিনিয়োগের ফল মিলেছে।