উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহারকে যতটা সম্ভব উৎসাহ দিতে হবে। ভারতের প্রতিটি রাজ্য, প্রতিটি জেলার একটি বিশেষত্ব এবং ক্ষমতা রয়েছে, তা তুলে ধরতে হবে। শনিবার নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের ষষ্ঠ বৈঠকে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের ষষ্ঠ বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রমুখ। এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করতে চলেছে, সেই সময় গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমি রাজ্যগুলির কাছে অনুরোধ করব, স্বাধীনতার ৭৫ বছরের জন্য নিজ-নিজ রাজ্যে সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে যুক্ত করে কমিটি গঠনের জন্য।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনা-পরিস্থিতিতে আমরা দেখেছি কীভাবে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার একসঙ্গে কাজ করেছে, এর ফলে দেশ সফলতা পেয়েছে। বিশ্বেও ভারতের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন খতিয়ান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ” ২০১৪ সাল থেকে এযাবৎ গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় ২.৪ কোটিরও বেশি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। আরও একটি উদ্যোগ চলছে, যার ফলে ভারতের ছ’টি রাজ্যে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়ি নির্মিত হবে। কয়েক মাসের মধ্যে, নতুন মডেলের সঙ্গে এই প্রযুক্তির সৌজন্যে শক্তিশালী বাড়ি তৈরি করা হবে। জল জীবন মিশন সূচনা হওয়ার পর থেকে বিগত ১৮ মাসের মধ্যেই, পাইপের মাধ্যমে জলের কানেকশন দেওয়া হয়েছে ৩.৫ কোটির বেশি গ্রামীণ পরিবারে। আমরা এটাও দেখতে পাচ্ছি কীভাবে দেশের প্রাইভেট সেক্টর দেশের বিকাশ যাত্রায় উৎসাহের সঙ্গে এগিয়ে আসছে।” মোদী জানান, “বিগত কয়েক বছরে, ব্যাঙ্ক একাউন্ট খোলা, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ, বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ দরিদ্রদের জীবনে আমূল পরিবর্তন এনেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আত্মনির্ভর ভারত অভিযান, এমন একটি ভারত গড়ার মার্গ, যা শুধুমাত্র নিজেদের প্রয়োজনের জন্যই নয়, বিশ্বের জন্যও উৎপাদন করবে এবং এই উৎপাদন বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেবে। সময় নষ্ট না করে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মন স্থির করেছে দেশ। এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে যুব সমাজ। উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির ব্যবহারকে যতটা সম্ভব উৎসাহ দিতে হবে আমাদের। ভারতের প্রতিটি রাজ্য, প্রতিটি জেলার একটি বিশেষত্ব এবং ক্ষমতা রয়েছে। নীতি কাঠামো এবং কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”প্রধানমন্ত্রী জানান, “কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন সেক্টরের জন্য পিএলআই প্রকল্প চালু করেছে। দেশে উতপাদন বৃদ্ধির একটি দুর্দান্ত সুযোগ। রাজ্যগুলির এই প্রকল্পের পূর্ণ সুবিধা নেওয়া উচিত এবং আরও বেশি করে বিনিয়োগ আকর্ষিত করা উচিত।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বিগত বছরগুলিতে কৃষিক্ষেত্র থেকে শুরু করে পশুপালন, মৎস্যপালনের ক্ষেত্রে একটি সামগ্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, করোনার সময়কালেও দেশের কৃষি রফতানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কাঁচা মাছ রফতানি করার দেশ হল ভারত। তাহলে আমরা কী প্রক্রিয়াজাত মাছ বড় আকারে রফতানি করতে পারি না?” মোদী বলেন, “ভারতের নাগরিকদের জন্য, আমাদের অবশ্যই সহজতর জীবনযাত্রার চেষ্টা করা উচিত। এর ফলে ভারতীয়দের আকাঙ্ক্ষা অর্জনে এবং তাদের জীবনকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করবে।”
2021-02-20