একুশের ভোটে রাজনৈতিক হিংসা আটকাতে বাড়তি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় পরিবর্তন যাত্রার সূচনা অনুষ্ঠানে থেকে বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা চাণক্য মমতা সরকারকে একেবারে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, “একুশের ভোটের দিন রাস্তায় তৃণমূলের একটা গুন্ডাও রাস্তায় দেখা যাবে না। এই আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি আমি দিয়ে গেলাম”। একইসঙ্গে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন এরাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে আম্ফান দুর্নীতি নিয়ে উচ্চস্তরের তদন্ত কমিটি তৈরি করবেন তারা, ফিরিয়ে দেবেন সাধারন মানুষের টাকা। অপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের জেলে পাঠাবেন। আর রাজনৈতিক খুন ও হিংসার সাথে জড়িতরা পাতালে গিয়ে লুকালেও তাদের বের করে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন।
শাহের এদিনের বক্তব্যে আগাগোড়াই ছিল রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কি কি উন্নয়নের কাজ করবেন সেই খতিয়ান যেমন ছিল তেমনি ছিল হুঁশিয়ারি বার্তা। শাহ বক্তব্য রাখার সময় বলেন, তার দলের ১৩০ জন কর্মী রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়ে শহিদ হয়েছেন এই রাজ্যে। এই বলিদান কখনো ব্যার্থ হতে দেবেন না তাঁরা। ক্ষমতায় এলে এদের মৃত্যুর জন্য দায়ী অপরাধীদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পাঠানো বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বা আম্ফানের মত বিপর্যয় মোকাবিলা জন্য পাঠানো টাকা যারা নয়ছয় করেছেন, যারা মানুষের প্রাপ্য তাদের পেতে দেয়নি, সেই সব দুর্নীতিবাজদের প্রয়োজনে পাতাল থেকেও বের করে আনবেন।
শাহ বলেন, বিজেপি রাজ্যে আক্ষরিক অর্থেই পরিবর্তন আনায় বিশ্বাসী। বিজেপির ক্ষমতায় এলে এরাজ্যে কাটমানির রাজনীতি বন্ধ করা হবে। বন্ধ হবে সিন্ডিকেট রাজ। শাহ বলেন, তৃনমূল শুধুমাত্র মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার কোনো বাস্তবায়ন করেনি। কারণ তৃণমূল শুধু ভাইপোর কল্যাণে কাজ করে। তাই তিনি আহ্বান জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের এই অপশাসন থেকে মুক্তি পেতে বাংলায় পরিবর্তন আনুক মানুষ। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন বিজেপি ক্ষমতায় এলে সোনার বাংলা গড়ে তুলবে, যেখানে কৃষক ফসলের সঠিক দাম পাবে, মৎস্যজীবীরাও কৃষক সম্মান নিধির মতো প্রক্ল্পের আওতাভুক্ত হয়ে বছরে ৬ হাজার টাকা পাবে। সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ সহ রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন চালু করা হবে।
শাহ প্রতিশ্রুতি দেন গঙ্গাসাগরকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে তাদের সরকার। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সি-ফুড প্রসেসিং হাব গঠন করা হবে। গঙ্গাসাগর মেলা যাতে আন্তর্জাতিক তকমা পায় তার চেষ্টাও তারা করবেন। আর এই সবকিছু তখনই সম্ভব যখন মোদীর কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই রাজ্যেও বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার গঠন হবে।