করোনা টিকা নেওয়ার জন্য এবার নিজেই নিজের নাম নথিভুক্ত করা যাবে কো-উইন অ্যাপে। এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের নতুন ভার্সন কো-উইন ২.০ আনল কেন্দ্রীয় সরকার। নয়া ভার্সনে থাকবে জিপিএসের সুবিধা। কাজেই নিজের পছন্দমতো টিকা কেন্দ্র বেছে নিতে পারবেন ৫০ বছরের বেশি বয়সীরা। কাছাকাছি সুবিধা মতো কেন্দ্রে গিয়ে টিকার ইঞ্জেকশন নেওয়া যাবে।
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ১৬ জানুয়ারি থেকেই দেশ জুড়ে গণ-টিকাকরণ পর্ব শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী-সহ করোনা-যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে পুলিশ, প্রশাসন, ফ্রন্টলাইন কর্মীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এরপরে পঞ্চাশোর্ধ প্রবীণ ও পঞ্চাশ বছরের নীচে কোমর্বিডিটির রোগীদের টিকা দেওয়া হবে।
দেশের বৃহত্তর টিকাকরণ কর্মসূচিতে নাম নথিভুক্ত করার জন্য কো-উইন নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে ভারত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে বলেছেন, এবার থেকে কো-উইন অ্যাপে সেলফ-রেজিস্টারের সুবিধা থাকবে। কো-উইন পোর্টালে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক ভাবে থাকাটা জরুরি নয়। টিকা নেওয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপের পাশাপাশি কো-উইন পোর্টালের মাধ্যমেই নাম নথিভুক্ত করা যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র বলেছেন, ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হবে আর দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরেই। তার জন্য বৈঠক চলছে। প্রবীণদের সুবিধা দিতে কো-উইন অ্যাপে নির্দিষ্ট অপশন রাখা হবে, যেখানে নিজেদের পছন্দমতো টিকাকরণ কেন্দ্র বেছে নিতে পারবেন বয়স্করা। তাঁদের ঠিক করা লোকেশনেই টিকা দেওয়া হবে। সেখানকার ঠিকানা এসএমসে চলে আসবে, সরকারি খাতাতেও রেকর্ড হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় সরকার আগেই জানিয়েছে, ৩০ কোটিকে প্রথম দেওয়া হবে টিকা। যার মধ্যে প্রথমে দেওয়া হয়েছে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তারি পড়ুয়ারা। এখন টিকা নিচ্ছেন পুলিশ, প্রশাসন, মিউনিসিপ্যালিটির কর্মীরা। তৃতীয় ক্যাটেগরিতে রাখা রয়েছে ২৭ কোটি মানুষকে, যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি। চতুর্থ ক্যাটেগরিতে থাকবে কোমবির্ডিটির রোগীরা এবং ৫০ বছরের কমবয়সী যাদের ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো রোগ রয়েছে, তাঁরাও থাকবেন হাই-রিস্ক গ্রুপে।
টিকা নেওয়ার জন্য নাম রেজিস্টার করাতে গেলে আইডি প্রুফ আগে দিতে হবে। নিজের পাসপোর্ট সাইজের ফটো, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট জব কার্ড, প্যান কার্ড, পাসবুক (ব্যাঙ্ক/পোস্ট অফিস), পাসপোর্ট, পেনশন ডকুমেন্ট, যেখানে চাকরি করেন সেখানেকার আইডি কার্ড, ভোটার কার্ড ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। টিকা নেওয়ার আগে তাদের মোবাইলে এসএমএস আসবে। সেখানে টিকা নেওয়ার দিন ও জায়গা বলা থাকবে।
যাঁদের টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের কাছে এসএমএস যাবে। মোট ১২ টি ভাষায় এসএমএস পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ দেওয়ার পরে একটি কিউ আর কোড নির্ভর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। সেই সার্টিফিকেট মোবাইলে রাখা যাবে। এছাড়া যাঁরা ভ্যাকসিন নেবেন, তাঁদের সম্পর্কে ডিজি লকার নামে এক ডকুমেন্ট স্টোরেজ অ্যাপে। সেই সঙ্গে থাকবে হেল্পলাইন। তা সপ্তাহের সাতদিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে।