সে বার বিমানে মুকুল রায়ের সঙ্গে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের দেখা। নেতা ও অভিনেতা দুজনেই তখন বলেছিলেন চান্স মিটিং। অর্থাৎ হঠাৎ দেখা হয়ে গিয়েছে।
রাজনীতিতে এর পর যা হয়। সন্দেহ, জল্পনা গিয়েও যায় না। থেকে যায়। প্রসেনজিতের চাওয়া না চাওয়ার উপর চিত্রনাট্য থেমে থাকল না। সন্দেহ থাকল। জল্পনার গল্পও এগোল।
তার পর দেখা গেল, সেই সন্দেহে ইন্ধন দিলেন স্বয়ং বুম্বাদা। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান পদ থেকে হঠাৎ ইস্তফা দিলেন। দিব্যি দেখা গেল, নবান্নর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে। প্রসেনজিতের ছেড়ে যাওয়া পদে অভিষেক হল রাজ চক্রবর্তীর।
আর আজ, মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীর পূণ্য তিথিতে প্রসেনজিতের বাসভবনে দেখা গেল বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে। যিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ফাউন্ডেশনের অন্যতম মাথা। দেখা গেল, তিনি প্রসেনজিৎকে অমিত শাহ বিজেপির অভিযান সংক্রান্ত একটি বই উপহার দিচ্ছেন। তা সাদরে হাসিমুখে গ্রহণ করছেন প্রসেনজিৎ।
এর মাঝে আরও একটি ঘটনা নজরে না পড়ার কথা নয়। তা হল, ২৩ জানুয়ারির সন্ধ্যার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। সেদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ। সেই সঙ্গে ছিলেন ইন্দ্রানী হালদার।
এই সব সাত সতেরো যোগ করলে সরলরেখায় হয়তো মুরলীধর সেন লেনে পৌঁছয়। বিষয়টি মঙ্গলবার এমন সময়ে জানাজানি হয়েছে যে প্রসেনজিতের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
তবে সূত্রের মতে, প্রসেনজিৎ একা নয়, বিজেপি নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকের হিট জুটিটাই দলে টানতে চাইছে। প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্রের দাবি, ঋতুপর্ণার সঙ্গে তাঁদের কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
আসলে প্রসেনজিতের আরও এক নায়িকাকে দলে নিতে চেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষরা। তিনি রায়দিঘীর তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। দেবশ্রী কলকাতা থেকে উজিয়ে দিল্লিতে দিনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি সদর দফতরেও পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু শোভন-বৈশাখীর বাধায় তাঁর গৈরিকীকরণ হয়নি। ফলে তৃণমূলেই থেকে গিয়েছেন।
সরস্বতী পুজোর সকালেই জানা গিয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তীর মুম্বইয়ের বাংলোয় গিয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। যদিও সরসঙ্ঘ প্রধান এবং মিঠুন দুজনেই জানিয়েছিলেন এই সাক্ষাত্ সৌজন্যমূলক। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। মিঠুন বলেছিলেন, মোহন ভাগবতের সঙ্গে তাঁর আধ্যাত্মিক যোগ রয়েছে। রাতে দেখা গেল বুম্বাদার বাড়িতে গিয়েছেন বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়।