রাশিয়ার কিরোভ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন একেটিরিনা। ১১ বছর আগে ফেসবুকের দৌলতে একেটিরিনার সঙ্গে আলাপ হয় নদিয়ার গাংনাপুরের দেবাশিষ দাসের। দেবাশিষ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। প্রায় বছর তিনেক চলে প্রেমপর্ব। তারপর লং ডিসট্যান্স রিলেশিপের পাট চুকিয়ে সোজা কিরোভ থেকে গাংনাপুরের বিবেকানন্দ পল্লিতে এসে ওঠে একেটিরিনা। ভালোবাসার টানে ৮ বছর আগে রাশিয়া থেকে নদিয়ায় চলে আসে রুশ যুবতী। চার হাত এক হয় দেবাশিষ-একেটিরিনার। সেই থেকে গাংনাপুরের শ্বশুরবাড়িতেই জমিয়ে সংসার করতে ব্যস্ত একেটিরিনা। বিয়ের পর একবারই রাশিয়ায় বাপের বাড়ি গিয়েছিল একেটিরিনা। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা দেখতে আবার রাশিয়া গিয়েছিল সে।
৫ বছরের ছেলে দত্তাত্রেয়কে নিয়ে এখন একেটিরিনা বাংলার গাংনাপুরের ব্যস্ত গৃহবধূ। সকাল থেকে রান্নাবান্না সেরে এদিন পুজো-অর্চনার জোগাড় করা শুরু করে একেটিরিনা। সবই সে নিজে হাতে করে। একমাত্র সন্তান দত্তাত্রেয়র হাতেখড়ি উপলক্ষে আজ বাড়িতেই সরস্বতী পুজোর আয়োজন করেছিল একেটিরিনা। এর আগে যদিও বাড়িতে লক্ষ্মী ও গণেশের পুজো করেছে, তবে দাস পরিবারে সরস্বতী পুজো এবারই প্রথম। রাশিয়ান সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা একেটিরিনা এখন পুরোদস্তুর বাঙালি বউমা। বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি থেকে আচার সবই তার প্রায় নখদর্পণে।
একেটিরিনা জানায়, বাঙালি আচার-অনুষ্ঠান তার খুব ভালো লাগে। এখন শাশুড়ি সাহায্য করলেও আগামীতে সব সে নিজে হাতেই সামলাবে। একইসঙ্গে একেটিরিনা আরও বলে, ফুচকা খেতে ভালো লাগে তার। ভালো লাগে মাংস খেতে। আর শাহরুখ খানের ছবি দেখতে ভালোবাসে। ছেলে দত্তাত্রেয়, স্বামী দেবাশিষ, শাশুড়ি মাকে নিয়ে বছর ৩০-এর রুশ যুবতী একেটিরিনার ভরা সংসারে নীরবে বেজে চলে প্রেমের জয়গান।