আশঙ্কার হাওয়া ঘুরপাক খাচ্ছিলই, এবার সরাসরি দাঁত বসাল দেশের কোভিড পরিস্থিতিতে। কোভিডের গ্রাফ যখন উল্লেখযোগ্য ভাবে নিম্নমুখী, তখনই খোঁজ মিলল করোনার নয়া স্ট্রেনের! দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে করোনার যে ক্ষতিকর ও তীব্র সংক্রামক স্ট্রেন মিলেছে, সেটাই ভারতে এসে পৌঁছেছে। যদিও যে আক্রান্তদের শরীরে করোনার এই নতুন স্ট্রেন মিলেছে, তাঁরা প্রত্যেকেই টুরিস্ট।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, চার জন পর্যটকের শরীরে মিলেছে দক্ষিণ আফ্রিকার করোনা স্ট্রেন এবং এক জন পর্যটকের শরীরে মিলেছে ব্রাজিলের করোনা স্ট্রেন। ৫ জনকেই বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনে তাঁরা অনেকেরই সংস্পর্শে এসেছেন স্বাভাবিক ভাবেই। শুরু হয়েছে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং। এছাড়াও ব্রিটেনের স্ট্রেন ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে দেশে। সেই স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১৮৭ জন। এঁদের সংস্পর্শে আসা সকলকেও পরীক্ষা করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
আমেরিকা-সহ মোট ৪১টি দেশে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন ভাল রকম ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটেনের স্ট্রেনও ছড়িয়েছে মোট ৮২টি দেশে। ৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ব্রাজিলের স্ট্রেন। হু জানিয়েছে, এই তিনটি স্ট্রেনই অনেক বেশি সংক্রামক এবং দ্রুত ছড়ায়। তীব্রতাও বেশি এদের। যে সব ভ্যাকসিন চলছে সারা বিশ্বে, সেগুলি এই স্ট্রেনগুলির ক্ষেত্রে কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় থেকে গেছে।
গত বছরের মার্চে প্রথম সংক্রমণ শুরু পর থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৯২ লক্ষের বেশি মানুষ। মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ। ইতিমধ্যেই দেশে করোনা টিকা পেয়েছেন ৮৭ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৯৫ জন।
তবে এর মধ্যেই করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ফের বাড়ছে বলে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মহারাষ্ট্রের লাগামছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা দেশেই সংক্রমণের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। আজকের বুলেটিনে অবশ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দৈনিক সংক্রমণের হার ফের কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নেমেছে ৯ হাজারে। গতকালের থেকে যা প্রায় ২১ শতাংশ কম।
করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৬ হাজারে পৌঁছেছে। আড়াই লাখের কোঠা থেকে এখন করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা দেড় লাখেরও কম। করোনা অ্যাকটিভ কেসের হার দেড় শতাংশেরও নীচে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড অ্যাকটিভ কেসের হার এক শতাংশের নীচে নেমে গেলে সংক্রমণের বাড়বৃদ্ধি আরও কমবে। দেশের কোভিড পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।