সা বিদ্যা পরমা মুক্তির্হেতুভূতা সনাতনী – পঞ্চম অধ্যায়

পঞ্চম অধ্যায়

বেদে বলা হয়েছে –

চত্বারি বাক্ পরিমিত পদানি

তানি বিদুব্রাহ্মণা যে মনীষিণঃ।

গুহা ত্রীণি নিহিতা নেজয়ন্তি

তুরীয়ং বাচো মনুষ্যা বদন্তি।।

বাক্ চারি প্রকার , মনীষীগণ তা জানেন। এই চার প্রকার বাকের তিনটি গুহ্য, প্রকটিত হয় না। তুরীয় অর্থাৎ চতুর্থ বাক আমরা অর্থাৎ মনুষ্যরা বলে থাকি। শতপথব্রাহ্মণ, তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ প্রভৃতি এর ব্যাখ্যা করেছেন। 

চৈতন্যের চারি অবস্থা – জাগ্রৎ , স্বপ্ন , সুষুপ্তি , তুরীয়। যে অবস্থায় আত্মা ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে উপভোগ হয় তাই জাগ্ৰৎ- 

স্বৈরিন্দ্রিয়ৈর্ষতাত্মা ভুঙক্তে ভোগান্ স জাগরো ভবতি।

জাগ্রৎ অবস্থায় যে বাক্ তার নাম বৈখরী। এই বাক্ আমরা বলে থাকি। বকত্রে তাঁর আবির্ভাব এবং বকত্রেই এর স্ফূর্তি। বকত্রের অধিপতি ব্রহ্ম। বৈখরী বাক্ তাই নিজেই ব্রহ্ম। তিনিই ব্রহ্মশক্তিরূপা।

সংজ্ঞারহিতৈরপি তৈরস্যানুভবো ভবেৎ পুনঃ স্বপ্নঃ।

স্বপ্নাবস্থায় অনুভব ইন্দ্রিয় সাহায্যেই হয়। কিন্তু সংজ্ঞা থাকে না। স্বপ্নাবস্থায় বাক্ মধ্যমা। প্রাণ হতে এর উৎপত্তি। তিনি প্রাণের শক্তি। তিনি তখন বৈষ্ণবী , বিষ্ণুমায়া।

আত্মনিরুদ্যুক্ততয়া নৈরাকুল্যাং ভবেৎ সুষুপ্তিরপি।

আত্মার কোনো চেষ্টা নেই, আকুলতা নেই। আত্মা শান্ত। তাই আত্মার অপর নাম সুষুপ্তি। এইরূপে হৃদয় হতে সুষুপ্তি অবস্থায় যে বাক্ তা পশ্যন্তী। হৃদয়ে এর স্ফূর্তি। তাই পশ্যন্তী বাক্ নিজেই রুদ্রশক্তি।

এর পরের অবস্থা তাতে চেতঃ হতে সমস্ত ঘন অবিলতা সরে যায়। তাতে তখন আত্মা তমঃশূন্য চেতসে তুরীয় ব্রহ্ম বা পরমাত্মাকে দর্শন করে থাকেন। 

পশ্যতি পরং যতাত্মা নিস্তমসা চেতসা তুরীয়ং তৎ।

তুরীয় অবস্থায় যে বাক্ তা পরা। এই বাক্ নাদাত্মিকা। মুলাধার হতে এটি উদিত হয়ে আত্মায় এই পরার বিকাশ হয়।

শাস্ত্র দ্বিজগণের ত্রিসন্ধ্যার বিধি করেছেন। ত্রিসন্ধ্যা – প্রাতঃসন্ধ্যা , মধ্যাহ্নসন্ধ্যা, সায়ংসন্ধ্যা। এঁদের মধ্যে প্রাতঃসন্ধ্যায় অধিষ্ঠাত্রী দেবী গায়ত্রী- ঋগ্বেদরূপা, মধ্যাহ্নসন্ধ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সাবিত্রী – যর্জুবেদরূপা এবং সায়ংসন্ধ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী – সামবেদরূপা।

ত্রিসন্ধ্যা উল্লিখিত দেবী অগ্নিরূপিণী। গার্হপত্য , দক্ষিণাগ্নি, আহবনীয়-ভেদে অগ্নিও ত্রিরূপ। সুতরাং , গায়ত্রী গার্হপত্যরূপা , সাবিত্রী দক্ষিণাগ্নি , এবং সরস্বতী আহবনীয়রূপা। গায়ত্রী অগ্নি বা ব্রহ্মের প্রকৃতি বলে তাঁর ৪ বা ১০ হস্ত, ৪ মুখ । তিনি হংস বাহনা। সাবিত্রী রুদ্র প্রকৃতি , তাই তিনি চতুর্ভুজা , চতুর্মুখা এবং বৃষবাহনা। সরস্বতী বিষ্ণু প্রকৃতি , তিনি তাই একরূপে গরুড় বাহনা, চতুর্হস্তা, একবকত্রা। তিনি শঙ্খ ,চক্র ,গদা ও অভয়মুদ্রা ধারণ করছেন।

অগ্নিপুরাণ বলেন মা ব্রহ্মময়ী গায়মান গুরুরূপে প্রাণকে ত্রাণ করেন তাই তাঁর নাম দেবী গায়ত্রী, তিনি সবিতাকে প্রকাশ করেন বলে তাঁর নাম সাবিত্রী , বাগরূপা বলে তিনি সরস্বতী।

গারস্থিব্যান্ যতস্ত্রাংয়ম্ভার্যা প্রাণাংস্তথৈব চ।।

ততঃ স্মৃতেয়ং গায়ত্রী সাবিত্রীয়ং ততো যতঃ।

প্রকাশনাৎ সা সবিতুর্বাগুরুত্বাৎ সরস্বতী।।

 তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণে  আহ্নিককৃত্যতত্ত্বে বলা হয়েছে- 

গায়ত্রী নাম পূর্বাহ্নে সাবিত্রী মধ্যমে দিনে।

সরস্বতী চ সায়াহ্নে সৈব সন্ধ্যা ত্রিযু স্মৃতা।।

প্রতিগ্রহান্নদোষাচ্চ পাতকাদুপপাতকাৎ।

গায়ত্রী প্রোচ্যতে তস্মাদ্ গায়স্তং ত্রায়তে যতঃ।। ব্যাসঃ।।

সবিতৃদ্যোতনাৎ সৈব সাবিত্রী পরিকীর্তিতা।

জগতঃ প্রসবিত্রীত্বাৎ বাগরূপত্বাৎ সরস্বতী।।

….. গায়ত্রী ব্রহ্মরূপা চ সাবিত্রী বিষ্ণুরূপিণী।

সরস্বতী রুদ্ররূপা উপাস্যা রূপভেদতঃ।।

যোগিযাজ্ঞব্ল্ক্যঃ । পূর্বসন্ধ্যা তু গায়ত্রী সাবিত্রী মধ্যমা স্মৃতা। যা ভবেৎ পশ্চিমা সন্ধ্যা বিজ্ঞেয়া সা সরস্বতী।।

… সায়াহ্নে শিবরূপাঞ্চ বৃদ্ধাং বৃষভবাহিনীং।

সূর্যমন্ডলমধ্যস্থাং সামবেদ্সমাযূতাম্।।

তন্ত্রসারে বাগীশ্বরী যন্ত্রের অঙ্কন – পদ্ধতি আছে। বাগীশ্বরী পূজা ক্রমও এখানে উল্লেখ করা হয়েছে সবিস্তারে।

            এই যন্ত্র স্থাপন করলে বিদ্যায় অত্যন্ত শুভ ফল লাভ সম্ভব।  নিদানপক্ষে যন্ত্রটি লাল কালিতে কাগজে লিখে বা প্রিন্ট করে পড়ার টেবিলে রাখলে বা বই-এর উপরে লাগিয়ে রাখলেও খানিক শুভ ফল পাওয়া যায়।

 যাক সব জিনিস সব জায়গায় উল্লেখ করতে নেই বলে আমি সেসব এখানে আলোচনা করব না। যদি কখনো ভালো গুরু পাই এবং তাঁর যোগ্য শিষ্যা হতে পারি তবে সেসব নিয়ে লিখব। 

কৃত্তিবাস বলেছেন –

 সরস্বতী অধিষ্ঠান আমার শরীরে।

তাই কৃত্তিবাস রচে গীত সরস্বতী বরে।।

In Adilabad district in Telangana is the ancient temple of Gnana Saraswati in Basara. Even today thousands of children have their Aksharabhyaasam here.

জীবনে যত পূজা

              হল না সারা,

       জানি হে জানি তাও

              হয় নি হারা।

       যে ফুল না ফুটিতে

       ঝরেছে ধরণীতে,

       যে নদী মরুপথে

              হারালো ধারা,

       জানি হে জানি তাও

              হয় নি হারা।

ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আজও দেবী সরস্বতীর নাড়ির টান অটুট। তিনি কেবল বিদ্যার দেবী ছিলেন না। তিনি আদি পরাশক্তির এক অনন্য রূপ। তিনি বিদ্যা ,প্রজ্ঞা ও বুদ্ধি রূপে নিরাকারে সর্বত্র আজও বিরাজমান । তাই তিনি আসেন, যেথায় তিনি শ্রদ্ধা পান। তিনি দনুজদলনী দেবী। সমগ্র কাশ্মীর জুড়ে তিনি শক্তি রূপে উপাসিতা হতেন।  তিনি জটামুকুট ধারিনী। তিনিই মহাকালী, মহাগৌরী, তিনিই গান্ধার কুলদেবী সিংহবাহনা গান্ধারী। তিনি সর্বাস্ত্রমহাজ্বালা , আবার তিনিই মানবী , মহামানসী। তিনি সর্পধারিণী বৈবাট্যা, ময়ূরবাহনা অচ্ছুপ্তা। তিনি কাশ্মীর , কুরুক্ষেত্র প্রভাস, বঙ্গ – সমগ্র অখন্ড ভারত  হতে যবদ্বীপ , তিব্বত হতে জাপান একই রূপে একই ভাবে বিরাজিতা।

Beginning with the ancient temple of Sharada Devi in Kashmir. A holy Shakthi Peetham unfortunately in ruins in PoK now, thanks to Islamic invaders. नमस्ते शारदे देवी काश्मीरपुरवासिनि त्वामहं प्रार्थये नित्यं विद्यादानं च देहि मे॥

 তাই আজও মন্ত্র উচ্চারিত হয় – ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ ।

বেদ –বেদাঙ্গ বেদান্তবিদ্যাস্থানেভ্য এব চ ।। 

যে মিথ্যা বলে তাঁকে দেবী সরস্বতীর নামে প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় – 

বাগদৈবত‍্য্যৈশ্চ চরুভির্যজেরংস্তে সরস্বতীম্।

অনৃত্যস‍্য্যৈনসস্তব্য কুর্বাণো নিষ্কৃতিং পরাম্।।

সেই প্রায়শ্চিত্ত করতেই সরস্বতী যাগ। সেই কারণেই দেবীকে চরু অর্থাৎ পায়েস উৎসর্গ করতে হয় । ভরতমুনি তাঁর নাট্যশাস্ত্রে বলেছেন – 

ব্রহ্মাণং মধুপর্কেণ পায়সেন সরস্বতীম্ ।

শিববিষ্ণুমহেন্দ্রাদ্যাঃ সম্পূজ্যা মোদকৈরথ।।

সেই একই কারণে সরস্বতীর তন্ত্ররূপের নিকট উৎসর্গ প্রথা লুপ্ত হয় নি আজও। অনেকেই তাই ইলিশ মৎস উৎসর্গ করেন। 

From there to Risyasringapuram (Sringeri) in Karnataka where Jagadguru Adi Shankaracharya established the Dakshinamnaya Sharada Peetham, the first among the four, in order to rejuvenate Sanatana Dharma. Sharada Devi continues to bless us from here!

জীবনে আজো যাহা

                                  রয়েছে পিছে,

                           জানি হে জানি তাও

                                  হয় নি মিছে।

                           আমার অনাগত

                           আমার অনাহত

                           তোমার বীণা-তারে

                                  বাজিছে তারা–

                          জানি হে জানি তাও

                                  হয় নি হারা।

ওঁ সরস্বতী নমস্তুভ্যং বরদে কামরূপিণি।

বিদ্যারম্ভং করিষ্যামি সিদ্ধির্ভবন্তু মে সদা।।

In Koothanoor in Thiruvarur district in Tamil Nadu is the temple dedicated to goddess Maha Saraswati. Story goes that a Chola king (Rajaraja ?) donated this village to poet Ottakkoothar to do his writing in peace. Koothan + ooru is the etymology.

ভারতচন্দ্র রায় গুণাকরের অন্নদামঙ্গলে ত্রিপদী ছন্দে সরস্বতী বন্দনায় দেবীর প্রতি ভক্তের শ্রদ্ধার নিদর্শন মেলে সেই সময়ের বঙ্গভূমিতে।

উর দেবি সরস্বতি স্তবে কর অনুমতি

বাগীশ্বরি বাক্যবিনোদিনি

শ্বেতবর্ণ শ্বেতবাস শ্বেত বীণা শ্বেত হাস

শ্বেতসরসিজনিবাসিনি

বেদ বিদ্যা তন্ত্র মন্ত্র বেণু বীণা আদি যন্ত্র

নৃত্য গীত বাদ্যের ঈশ্বরী…

চৈতন্যভাগবতকার বলেছেন – 

জিহ্বায় স্ফুরায় তাঁর শুদ্ধা সরস্বতী।

লোচনদাস তাঁর চৈতন্যমঙ্গলে বলেছেন – 

সরস্বতী বন্দো মাগো    মধুর পঞ্চমরাগে….

In the ancient land of Kalinga Desham (currently Odisha’s Jagatsinghpur) is the temple dedicated to goddess Sarala Devi, a tantric incarnation of Saraswati Devi. 15th cent. Sideshwar Parida became Sarala Das, author of Odia Mahabharata with her blessings

ভূলোকে অগ্নি, অন্তরীক্ষ লোকে হিরণ্য দ্যুতি ইন্দ্র এবং স্ব- লোকে সূর্য – এই তিনের যে জ্যোতি রাশি – তাঁহা সরস্বতীর জ্যোতি। জ্ঞানময়ী বা চিন্ময়ী রূপে তিনি সর্বত্র , সর্ব ব্যাপিনী। তাঁর জ্যোতি সর্বত্র পরিব্যাপ্ত । শুধু এই ত্রিলোক নয় ঊর্ধ্ব সপ্ত লোক নিম্ন সপ্ত লোক পর্যন্ত চতুর্দশ ভুবনে স্তরে স্তরে সেই জ্যোতি বিরাজিতা। সেই জ্যোতি অজ্ঞান রূপী তমসা কে নিবারন করে। যোগী হৃদয়ে যখন সেই আলো জ্বলে – তখন সকল প্রকার অন্ধকার নাশ হয়।

সেই আলোক আজও দেবী সরস্বতীর নামে কেউ কেউ জ্বালিয়ে চলেন। দেবী যেখানে পবিত্রতা ও শ্রদ্ধাপান সেখানেই থাকেন ,কর্মফল দান করেন। সেইরকম কর্মফল দান করেছেন সুজিত চট্টোপাধ্যায়কে। শিক্ষার আলোয় সমাজের প্রতিটি কোণের অন্ধকারকে মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিছিলেন তিনি। পড়াশোনা শেষে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন। চাকরিতে অবসর হয়ে গিয়েছে। তবে শিক্ষকতা ছাড়তে পারেননি। তাই গোটা অবসর জীবনটা মানুষ তৈরির কাজে ব্যয় করেছেন। আর এই কাজ করতে পারিশ্রমিক নিয়েছেন বছরে দু’‌টাকা। তাঁর নাম শুনলেই কপালে হাত ঠেকায় বর্ধমানবাসী। তিনি মা সরস্বতীর বর পুত্র, তাই ভবের ঘরে তিনি বিদ্যা স্বরূপ মায়াকে চিন্তে পেরে তাঁকেই আপন করে হয়েছেন সদাই ফকির। সেই সর্বত্যাগী মানুষই তাঁর কর্মফল স্বরূপ পাচ্ছেন পদ্মশ্রী ।

তিনি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের উত্তর রামনগর গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলায় সুজিতবাবুর পড়াশোনা গ্রামেরই রামনগর জুনিয়র হাইস্কুলে। তারপর বোলপুরের বাঁধগড়া হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে স্নাতক হন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন। জলপাইগুড়ি থেকে বিটি পাশ করেন। ১৯৬৫ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেন। শিক্ষকতা শুরু হয় রামনগর উচ্চবিদ্যালয়ে। ৪০ বছর ধরে করেন চাকরি। ২০০৪ সালে স্কুলের চাকরিতে অবসর নেন।

এখন বয়স ৭৬। তবে মনের বয়স অনেক কম। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত টিউশন পড়ানো নেশা সুজিতবাবুর। নিজের একটা নাম দিয়েছেন তিনি— সদাই ফকির। সেই সদাই ফকিরের পাঠশালায় পড়ুয়ার সংখ্যা এই মুহূর্তে তিনশোরও বেশি। এই বাজারে টিউশন ফি বছরে দু’‌টাকা। তাও দিতে হবে পাঠগ্রহণ সম্পূর্ণ হওয়ার পর। সুজিতবাবুর কথায়, ‘‌গুরুদক্ষিণা। যা না নিলে শিক্ষাদান সম্পূর্ন হয় না।’‌ সদাই ফকিরের গুরুকুলের নিয়ম দু’‌টাকা গুরুদক্ষিণা দিয়ে শিক্ষাগুরুকে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাবেন পড়ুয়ারা। 

পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম জঙ্গলের মাঝে বীরভূম জেলা লাগোয়া উত্তর রামনগর গ্রাম। সেখানেই বাস এই প্রবীন শিক্ষকের। মা আলোকলতার নামে পাঠশালার নাম আলোকতীর্থ। ৬৫ টাকার মাস মাইনেতে সাত ভাইকে মানুষ করেও অসহায় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছাশক্তিটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বরাবর। এবার বলুন যত শিক্ষিত মানুষ যতই নাস্তিক হয়ে মা ব্রহ্মময়ী বিদ্যাদেবীকে অস্বীকার করুন ,তিনি কিন এমন মানুষদের পবিত্রতার জন্যই আমাদের ত্যাগ করে যেতে পারবেন? 

              মধুর মধুর ধ্বনি বাজে

              হৃদয়কমলবনমাঝে॥

     নিভৃতবাসিনী বীণাপাণি   অমৃতমুরতিমতী বাণী

     হিরণকিরণ ছবিখানি– পরানের কোথা সে বিরাজে॥

     মধুঋতু জাগে দিবানিশি   পিককুহরিত দিশি দিশি।

     মানসমধুপ পদতলে   মুরছি পড়িছে পরিমলে।

এসো দেবী, এসো এ আলোকে,   একবার তোরে হেরি চোখে–

     গোপনে থেকো না মনোলোকে   ছায়াময় মায়াময় সাজে॥

সমাপ্ত

©দুর্গেশনন্দিনী

তথ্যঋণ স্বীকার : ১. ঋগ্বেদ্

২. মার্কণ্ডেয় পুরান

৩. শ্রী শ্রী চণ্ডী

৪. সরস্বতী তত্ত্ব

৫. সরস্বতী সভ্যতার ইতিহাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.