অন্ডাল বিমানবন্দরের অধিকাংশ শেয়ার হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের বেসরকারিকরণের প্রবণতার মাঝে এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে মমতা সরকারের এই উদ্যোগ নিয়েও এবার প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। সোমবার টুইটে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এই অতিরিক্ত শেয়ার কেনা সংক্রান্ত চুক্তির নথিপত্র কোথায়? কাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? তাঁর মতে, রাজ্যে এই মুহূর্তে যা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে অন্ডাল বিমানবন্দরের ৪৭ শতাংশ শেয়ার নিজের হাতে নিয়ে রাজ্য সরকার আর্থিক বোঝা আরও বাড়িয়েছে। এ নিয়ে যাবতীয় তথ্য এবং মমতা সরকারের বক্তব্য জানতে চান তিনি।
গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে সভা করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারিকরণের (Privatization) উলটোপথে হেঁটে পিপিপি মডেলে তৈরি অন্ডাল বিমানবন্দরের (Andal Airport) অধিকাংশ শেয়ার নিচ্ছে রাজ্য। জমিদাতাদের প্রত্যেককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। রাজ্যের অধীনে অধিকাংশ শেয়ার থাকায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণেও সরকারি কর্তৃত্ব থাকবে বেশি। ২০১১ সালে অন্ডালে বিমানবন্দর তৈরির জন্য পিপিপি মডেলে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে চুক্তির মাধ্যমে রাজ্য সরকার জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণের কথা জানায়। অন্ডালে কাজি নজরুল বিমানবন্দর চালুর পরও সেভাবে আয় না হওয়ায় তা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই জায়গা থেকে বিমানবন্দরটিকে ফের চাঙ্গা করে তুলতে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করল। ৪৭ শতাংশ শেয়ার এল রাজ্যের হাতে, আগে যা ছিল ২৬ শতাংশ।
[আরও পড়ুন: নবান্ন অভিযানে আহত বাম যুবনেতার মৃত্যু, প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা]
কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? কাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে? কত মূল্যে এই বাড়তি শেয়ার কেন হল? এর জন্য সরকারি কোষাগার থেকে কত খরচ হল? এমনই একাধিক প্রশ্ন তুলে এবার এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকারকে বিঁধলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এ নিয়ে সরকারের কাছে যাবতীয় তথ্য তিনি চেয়ে পাঠিয়েছেন। তাঁর মতে, এই বাড়তি শেয়ার কেনার জন্য মূলত কারা সুবিধা পেলেন, তা দেখা প্রয়োজন। আদৌ কি সাধারণ মানুষ এতে উপকৃত হলেন? সংশয় রয়েছে তাঁর। অন্ডাল বিমানবন্দরের আরও বেশি সরকারি বিনিয়োগের মতো সাধু সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্যপালের এই সংশয়প্রকাশ নবান্ন-রাজভবনের সংঘাতে আরেক নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করা হচ্ছে। নবান্নের তরফে অবশ্য এ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।