একাধিক তথ্য উঠে আসছে। সাতই ফেব্রুয়ারি যে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল উত্তরাখন্ডের চামোলি, তার কারণ অনুসন্ধান করে চলেছেন গবেষকরা। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স বা আইআইএসসি জানাচ্ছে চামোলিতে ঋষি গঙ্গা বানের পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে সাবগ্লেসিয়াল লেকের। একাধিক সাবগ্লেসিয়াল লেক তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়।
গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড বা সিএলওএফের মূল কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন। উত্তরাখন্ড সরকার প্রথমে বলেছিল এই বানের পিছনে রয়েছে হিমবাহ ধ্বস। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা আরও কারণ থাকতে পারে এই বানের। হতে পারে অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাসের চাপ, হতে পারে ভূমিক্ষয়। তবে আইআইএসসি জানাচ্ছে সাবগ্লেসিয়াল লেকও এর অন্যতম কারণ।
উপগ্রহ চিত্রের সূত্র ধরে জানা গিয়েছে ৫৬০০ মিটার উচ্চতায় প্রথম ধ্বস নামে। সেই ধ্বস ক্রমশ নীচের দিকে নামতে শুরু করে। এই ধ্বসের শক্তি বাড়ায় সাবগ্লেসিয়াল লেক। ধ্বসের কারণে একের পর এক সাবগ্লেসিয়াল লেক ভাঙতে থাকে। বাড়তে থাকে জলস্তর ও জলের চাপ। তারই পরিণাম এই ভয়াবহ বিপর্যয়।
দুই ধরণের লেক দেখা যায় পার্বত্য এলাকায়। গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ দিয়ে পরিবৃত জলাধার হল প্রো গ্লেসিয়ার লেক। অন্যদিকে গ্লেসিয়ার দ্বারা পরিবৃত জলাভূমি হল সাব গ্লেসিয়ার লেক। চামোলি এলাকায় একাধিক সাব গ্লেসিয়ার লেক রয়েছে।
এদিকে দেখা গিয়েছে উত্তরাখণ্ড বিপর্যয়ের পর হিমবাহ যে জায়গায় ভেঙে পড়েছিল সেই জায়গার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। গ্রাউন্ড জিরোর সেই ছবি ও ভিডিগুলিতে দেখে বোঝা গিয়েছে ওই এলাকায় এসেছে এক বিরাট পরিবর্তন। দেখা গিয়েছে ঋষিগঙ্গা নদী ধ্বসের ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর চামোলির সেই এলাকায় তৈরি হয়েছে একটি হ্রদ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই হ্রদ সৃষ্টির ফলে এলাকার আরও ক্ষতি হতে পারে।
তপোবন বাঁধের যেখান সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেখানে কাজ করছে ভারতীয় সেনার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। উদ্ধার কাজ কররার জন্য ও ত্রাণ পাঠানোর জন্য একটি দড়ির সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে ত্রাণ পাঠানো অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। যে সব গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে তাদের খাবারের প্যাকেট ও চিকিৎসার সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। প্রায় ১৩টি গ্রামের সঙ্গে এভাবেই সম্পর্ক রাখা হচ্ছে। ওই সব এলাকায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য ৮ সিটের একটি এয়ারবাস হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক এলাকা এখন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। জলেরও সমস্যা রয়েছে। তাদের কাছেও সাহায্য পাঠানো হচ্ছে।