পশ্চিম বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুর: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যে তৃণমূলের অন্যতম ভোট অস্ত্র তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে মদন মিত্র—তৃণমূলের প্রায় সব নেতাই সরকারি এই প্রকল্পের মাহাত্ম্য তুলে ধরছেন পথসভা থেকে জনসভায়।
অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা সরাসরি অভিযোগ করছেন, এই স্বাস্থ্যসাথী স্রেফ ভোটের গিমিক। এখন হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলোকে ধমকে চমকে বলা হচ্ছে তিন মাস রোগী ফেরানো যাবে না। অর্থাৎ ভোটের পর স্বাস্থ্যসাথী ভোকাট্টা হয়ে যাবে। তাই বাংলায় চাই আয়ুষ্মান ভারত।
একটা সরকারি প্রকল্প নিয়ে যখন রাজনৈতিক চাপানউতোরে সরগরম রাজ্য তখন শনিবার পশ্চিম বর্ধমানে দেখা গেল স্বাস্থ্য কার্ড থাকা সত্ত্বেও এক রোগীকে সাত হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে এই অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করছেন গ্রামবাসীরা। এদিন রানিগঞ্জ বাইপাস রোড দু’ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান নিমচা এলাকার গ্রামবাসীরা।
পরিস্থিতি এমন হয় যে ছুটে যেতে হয় পুলিশকে। পুলিশ পৌঁছে অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে গ্রামবাসীরা অবরোধ তুলে নেযন। তাঁদের দাবি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকার পরও সাতটা হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে। চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে কি সরকার আমাদের বোকা বানানোর জন্য এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিয়েছে? বিধানসভায় ভোট বয়কটের কথাও বলেছেন তাঁরা।
অন্যদিকে এদিনই পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে নর্দমায় মিলল পূরণ করা স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম। শনিবার সকালে এলাকার মানুষ দেখতে পায় সিনেমা মোড়ের কাছে একটি নর্দমায় গুচ্ছ গুচ্ছ পূরণ করা স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ ফর্মে যে ঠিকানা লেখা রয়েছে তা পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১ ব্লকের।
স্বাস্থ্যসাথীকার্ডের ফর্ম নর্দমায় পড়ে থাকা নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করেছে রাজ্য সরকারকে। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, সরকারি নথি নর্দমায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিচ্ছেন রাজ্যের মানুষ নাকি ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা পেয়ে গেছেন। এ যে আসনে লোক ভোলানোর খেলা তা এদিন ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। যদিও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নর্দমায় পড়ে থাকা নিয়ে বিজেপির চক্রান্ত দেখছে তৃণমূল। শাসপকদলের বক্তব্য, রাজ্যের দশ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাচ্ছে। তাই কিছু ফর্ম ফেলে বিজেপি সাধারণ মানুষকে দেখাতে চাইছে স্বাস্থ্যসাথীকার্ডের পরিষেবা মানুষ পাচ্ছে না।