করোনা বিধির তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে হাজারে হাজারে পুণ্যার্থী কালীঘাট মায়ের মন্দির দর্শনে যাচ্ছেন। করোনার হাত থেকে দর্শনার্ধীদের বাঁচাতে ১ জুলাই মন্দির খোলার আগে স্যানিটাইজার গেট লাগানো হয়েছিল মন্দিরের ৫টি গেট কিন্তু এই গেটগুলো কোনও কাজই করছে না।এই অবস্থায় করোনার ঝুঁকি নিয়েই মা কালী দর্শনের জন্য রোজ কাতারে কাতারে মানুষ যাচ্ছেন মন্দিরে। পুলিশ, কালীঘাট টেম্পল কমিটি এই বিষয় নির্বিকার। দর্শনার্থীরা কোথাও অভিযোগ করে কোনও সুরাহা পাচ্ছেন না।
একই অবস্থা পান্ডাদের।অথচ একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ৫টি স্যানিটাইজার গেট মন্দিরের ৫টি গেটে বসানো হয়েছিল।সেই গেটগুলি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পরে আছে।সেই গেট থেকে স্যানিটাইজার দর্শনার্থীদের শরীরে পড়া তো দূরের কথা সেগুলো সম্পূর্ণ অচল হয়ে পরে আছে। এখন প্রশ্ন উঠছে তাহলে এই ভাবে ঝুঁকি নিয়ে কেন কালী মায়ের দর্শনের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে? কেন স্যানিটাইজ না করেই দর্শনার্থীদের মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে?
এই প্রসঙ্গে কালীঘাট টেম্পল কমিটির সভাপতি ও সাংসদ শুভাশীষ চক্রবর্তীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। টেম্পল কমিটির সহ সভাপতি বাবলু হালদারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, “যারা স্যানিটাইজার গেট লাগিয়েছে তাদের বলা হয়েছে তারা এসে গেট দেবেন।” তবে এই যে দীর্ঘ সময় সাধারণ মানুষ,. দর্শনার্থী বিভিন্ন জায়গা থেকে মন্দিরে এসে স্যানিটাইজ না করা অবস্থায় মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করছেন তাদের ঝুঁকির জায়গা তা কী ভাবে প্রশমিত করা হবে? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেন নি বাবলু হালদার। উল্টে তিনি বলেছেন, “আমি এখন বাইরে আছি, আমি এর বেশি বলতে পারবো না।”
কালীঘাট মন্দির খুলেছে ১ জুলাই। মন্দিরের গর্ভগৃহ খুলেছে ২৯ ডিসেম্বর। তাই তার আগে স্যানিটাইজার গেট লাগানো হলেও সেগুলো অকেজো হয়ে পরে আছে প্রায় শুরু থেকেই। তাহলে এই অবস্থায় কেন মন্দির খোলা হলো? উঠছে এই প্রশ্নও।কারণ করোনার জন্য প্রশাসন মন্দির বন্ধ রেখেছিল। উপযুক্ত ব্যবস্থা করে স্যানিটাইজার গেট লাগিয়ে , থার্মাল সেন্সর বসিয়ে তার পর মন্দির খুললেও এই ব্যবস্থাগুলো এখন শুধু নামেই আছে। তার কোনও কার্যকারিতা নেই।
এই প্রসঙ্গে কালীঘাট মন্দির সেবায়েত কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটিৰ সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করলে তিনি সমস্ত অভিযোগ স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, “মন্দির খোলার পর কোনও সংক্রমণের খবর পাই নি। তবে স্যানিটাইজার গেট কাজ করছে না। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে মন্দিরে ঢুকছে। কালীঘাট থানাকে মেইল করে সব জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও কাজ হচ্ছে না।” এভাবে দর্শনার্থীদের মন্দিরে প্রবেশ কতটা নিরাপদ সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।