বন সহায়ক নিয়োগ নিয়ে আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। নিয়োগ নিয়ে হলফনামা তলব করল হাইকোর্ট। কীভাবে নিয়োগ? মেধাতালিকার কি অবস্থা? হলফনামায় জানতে চাইলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। ৪ মার্চের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিতে নির্দেশ।
উল্লেখ্য, মামলার বয়ান অনুযায়ী মামলাকারী সজল দে সহ ১২ জন চাকরিপ্রার্থী পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানান, রাজ্যের বন দফতর এ পদের জন্য ২০০০ শূন্য পদের জন্য নিয়োগ করা হবে এই মর্মে গত ৮ই আগস্ট ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের বন দফতর । কিন্তু সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে। সেই নিয়োগে প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের বক্তব্য বোন সহায়ক পদেদু’লক্ষ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের বন দফতরের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল তারা নিয়োগ প্রক্রিয়া যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ না করে নিয়োগ করা হবে না। কিন্ত রাজ্যের বন দফতর যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে দেয়। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। পরীক্ষার্থীরা বার বার রাজ্যের কাছে আবেদন করেও কোন লাভ না হওয়ায় স্যাট-এর দ্বারস্থ হন চাকুরী প্রার্থীরা।
মাসকয়েক আগে অষ্টম শ্রেণি পাশে বন সহায়ক পদে প্রচুর কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। অষ্টম শ্রেণি পাশের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষিতরাও আবেদনপত্র জমা দেন। শুধুমাত্র ইন্টারভিউর মাধ্যমে নিয়োগ হওয়ায় লম্বা লাইন পড়ে। এই শূন্যপদ নিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজেই। আলিপুরদুয়ারে প্রকাশ্য জনসভায় নাম না করে তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে ছেলেটা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ছিল, বন সহায়তা স্কিমে আমাদের সঙ্গে থাকা এক নেতা কারসাজি করেছে। আমার কাছে অনেকে এই অভিযোগ করেছে।’ এমনকী ঘোষণাও করে দেন, যে নির্বাচন ঘোষণা হলেও তদন্ত চলবে। এরপরই বন সহায়ক পদে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে অনুমোদন দেয় রাজ্য মন্ত্রিসভা। সেই মামলা গড়ায় SAT-এ। নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন চাকরিপ্রার্থীরা।
তার জবাবে সেদিনই হুগলির গুড়াপে বিজেপি-র মঞ্চ থেকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন রাজীব। বলেন, ‘‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়বে! কোন কোন নেতা ওই পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে চিঠি দিয়েছিলেন, তার সব নথি আমার কাছে রয়েছে।’’
মমতার উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে চাই, কোন উচ্চ নেতৃত্ব সুপারিশ করেছেন, কালীঘাট থেকে কী সুপারিশ এসেছে, সব নথি তুলে রেখেছি। আপনি আলিপুরদুয়ারে আছেন। সেখানকার জেলা সভাপতির কাছ থেকে জেনে নিন, উনিও সুপারিশ করেছিলেন।’’একই সঙ্গে বন-সহায়ক নিয়োগের ওই প্যানেল বাতিল করে দিলে তাঁর কিছু আসে যায় না বলেও দাবি করেছিলেন রাজীব।
রাজীব এও বলেছিলেন, ‘‘তদন্ত হোক। তবে সেটা যেন নিরপেক্ষ হয় এবং প্রতিহিংসামূলক না হয়।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘শুধু বন দফতর নয়। রাজ্য সরকার অন্য যত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করেছে তারও তদন্ত হোক।’’