সুখলতা রাও (১৮৮৬-১৯৬৯) িছেলন একজন শিশুসাহিত্যিক, সমাজসেবক। ১৮৮৬ সালের ২৩ অক্টোবর কলকাতায় তাঁর জন্ম হয়। তার পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও ভ্রাতা সুকুমার রায় ছিলেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক এবং ভ্রাতুষ্পুত্র সত্যজিৎ রায় ছিলেন অস্কারবিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা। সুখলতা কলকাতার ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয় এবং বেথুন কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯০৩ সালে তিনি বৃত্তি নিয়ে এফএ এবং পরে বিএ পাস করেন।
স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর সুখলতা কিছুদিন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯০৭ সালে উড়িষ্যার ডাক্তার জয়ন্ত রাওয়ের সঙ্গে বিবাহ হলে তিনি স্বামীর সঙ্গে কটক চলে যান। সেখানে স্বামীর সহযোগিতায় সুখলতা সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং কটকে ‘শিশু ও মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র’, ‘উড়িষ্যা নারী সেবা সংঘ’ প্রভৃতি সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে আলোক নামে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন।
সুখলতা বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় সাহিত্যচর্চা করেন এবং কুড়িটির মতো গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর শিশুতোষ গ্রন্থগুলি বিপুল প্রশংসা লাভ করে। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হলো: লালিভুলির দেশে, নিজে পড়, নিজে শেখ, গল্প আর গল্প (১৯১২), খোকা এলো বেড়িয়ে (১৯১৬), নতুন পড়া (১৯২২), সোনার ময়ূর, নতুন ছড়া (১৯৫২), বিদেশী ছড়া (১৯৬২), নানান দেশের রূপকথা, পথের আলো, ঈশপের গল্প, হিতোপদেশের গল্প, New Steps, Living Lights প্রভৃতি।
সুখলতা রাওয়ের নিজে পড় গ্রন্থটি শিশুসাহিত্য সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত হয় এবং এর জন্য তিনি ‘লেখিকা’ পুরস্কার ও ভারত সরকারের ‘সাহিত্য পুরস্কার’ (১৯৫৬) লাভ করেন। এছাড়া তাঁর আরও কয়েকটি গ্রন্থ পুরস্কৃত হয়। সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ পদক লাভ করেন। চিত্রশিল্পী হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল।
১৯৬৯ সালের ৯ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়।