দ্য ওয়াল ব্যুরো: সেজে উঠছে রাষ্ট্রপতি ভবন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনের লনেই দ্বিতীয় বার প্রধনামন্ত্রী হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করবেন নরেন্দ্র মোদী। তার প্রস্তুতিতে এখন সাজ সাজ রব। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে প্রায় হাজার ছয়েক অতিথি-অভ্যাগতের আপ্যায়নে সামান্য ত্রুটিও যেন না থাকে। মেনু থেকে শুরু করে, সাজসজ্জা—প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে রীতিমতো এলাহি কাণ্ড।
গত ২৩ মে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩০৩ আসনেই জয়লাভ করেছে তারা। ২০১৪ সালের চেয়েও অনেক বেশি আসনে কেন্দ্রে সরকার গঠন করছে বিজেপি তথা এনডিএ। তাই উদ্যোগ-আয়োজনের চমকও গতবারের তুলনায় ঢের বেশি।
মোদীকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। অতিথিদের তালিকা সেজে উঠেছে বহু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, রাষ্ট্রদূত, সেলিব্রিটি থেকে প্রবাসী ভারতীয়দের নামে। ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় সার্ক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এ বারে আমন্ত্রিত বিমস্টেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিরোধী শিবিরের প্রধান তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী এবং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে। শতাধিক এনআরআই তথা প্রবাসীরা দিল্লি উড়ে আসছেন শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তা ছাড়া অভ্যাগতদের তালিকায় থাকছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জুগনৌথ, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিং, থাইল্যান্ডের রাজার প্রতিনিধি, মায়ানমারের রাষ্ট্রপতি, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনা, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি-সহ অনেকে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতিমধ্যেই একদফা বৈঠক সেরেছেন মোদী-শাহ। দ্বিতীয় এনডিএ মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে বাংলায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত বিজেপি পরিবারের ৫৪ জনকেও বিশেষ অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। বুধবার বিকেলেই হাওড়া থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে রওনা করানো হচ্ছে ৫৪ জন মৃতের পরিবারের মোট ৭০ জন। এ খবর পাওয়া মাত্রই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ভবনের দরবার হলেই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হতো। ২০১৪ সালে সেই রীতি ভেঙে অনুষ্ঠান হচ্ছে ভবনের বাইরের লনে। অনুষ্ঠান শেষে ব্যাঙ্কোয়েট হলে থাকছে বিশেষ নৈশভোজের ব্যবস্থা। খাওয়া-দাওয়ার পালা অবশ্য শুরু হবে অনুষ্ঠান চলার সময় থেকেই। টুকটাক স্ন্যাকস দিয়েই শুরু হবে ভোজনপর্ব। পাতে পড়বে সিঙাড়া, পনিরের নানা পদ থেকে হরেক রকম মিষ্টি। অনুষ্ঠান শেষ হলে শুরু হবে নৈশভোজ। এ বারের নৈশভোজের বিশেষ আকর্ষণ ‘ডাল রাইসিনা।’ শেফ মচিন্দ্রা কাস্তোরের কথায়, ‘মা কি ডাল।’
দিল্লির একটি হোটেলের শেফ মাচিন্দ্রা। ২০১০ সালে এই ‘ডাল রাইসিনা’ রেঁধে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছেন, এ বারে রাষ্ট্রপতি ভবনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানের সেরা আইটেম হতে চলেছে এই ডিশ। পুরো রেসিপি নিয়ে মুখ না খুললেও শেফের কথায়, অড়হড় ডাল, টম্যাটো পিউরি, জাফরান যোগে এই ডিশ রাঁধতে সময় লাগবে ৬-৮ ঘণ্টা।