আজ যাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় দেখা যাচ্ছে। কাল তিনি নেই। পরশু দেখা যাচ্ছে, বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছেন তিনি। তলে তলে কে যে কোথায় কথা বলে রেখেছেন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। গত সাত দিনে অন্তত দুই বিধায়ককে পষ্টাপষ্টিই বেসুরো কথা বলতে শোনা গিয়েছে। এক জন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তাঁকে তৃণমূল বহিষ্কার করেছে। অন্যজন উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তাঁকে শোকজ করেছে পার্টি। সেই সঙ্গে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিস্থিতি যখন এমনই তখন ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার দলের সমস্ত বিধায়ক ও সাংসদকে কালীঘাটে তাঁর বাসভবনে বৈঠকে ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী কারণে, কেন বৈঠকে তাঁদের ডাকা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কী বলবেন তা স্পষ্ট নয়। আপাতত এটুকুই খবর যে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
তবে অনেকে মনে করছেন, দিদি হয়তো পরিষ্কার কোনও মেসেজ দিতে পারেন। যেমন সম্প্রতি একটা মিটিংয়ে তিনি বলেছেন, যাঁদের চলে যাওয়ার তাঁরা চলে যাক। থাকতে হবে না। সেই সঙ্গে প্রকাশ্য সভায় তিনি এও বলছেন, তৃণমূলে যাঁরা নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে দল করেছেন। তাঁরাই দলের সম্পদ।
তবে বিরোধীরা এ নিয়ে খোঁচা মারতে ছাড়ছেন না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “৩০ তারিখ অমিত শাহ কলকাতায় আসছেন শুনছি। তার আগে নিশ্চয়ই রোল কল হচ্ছে। কারা থাকবেন কারা চলে যাবেন হয়তো বুঝে নিতে চাইছেন।”
বিজেপি সূত্রের দাবি, আরও অন্তত চার জন তৃণমূল বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেবেন। এর মধ্যে এক জন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিধায়কও রয়েছেন। তা ছাড়া তিন সাংসদও গেরুয়া পথগামী হতে পারেন বলে দাবি করেছেন বিজেপির এক রাজ্য নেতা।
অন্যদিকে শুভেন্দু খোলাখুলিই বলছেন, ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখের পর আরও ঝটকা লাগবে তৃণমূলে। আনুমানিক ভাবে ১৬ তারিখ বা তার আগে পরে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার কথা। তার পরই আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে যাবে।
বিজেপির নেতাদের কথায়, তার পর পুলিশ প্রশাসন চলে যাবে কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। অর্থাৎ পুলিশ দিয়ে আরও ভয় দেখিয়ে আটকে রাখা যাবে না। সেই সময় নিচের তলায় ফের এক প্রস্ত ভাঙন হতে পারে তৃণমূলে। শুভেন্দুর এও বক্তব্য, “ভাঙন রুখতে অনেককেই টিকিট দেওয়া হবে বলে গাজর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। প্রতিটা কেন্দ্রেই এরকম চার পাঁচ জন করে রয়েছেন। কিন্তু টিকিট পাবেন তো একজনই। তার পর কী হয় দেখুন”।