বাজেট ২০২১ : করোনা আবহে কেন্দ্রের সামনে চ্যালেঞ্জ ‘five giants’ বধ

হাতে আর মাত্র কিছুদিন। তারপরেই পেশ হতে চলেছে ২০২১-২২ সালের কেন্দ্রীয় বাজেট। করোনা আবহে দেশের সামাজিক সুরক্ষা ও আর্থিক অবক্ষয়ের কথা মাথায় রেখে বেশ কয়েকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবারের বাজেট। তারই সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত ওই সমীক্ষা রিপোর্ট তুলে ধরেছে বাজেট পেশের আগে কেন্দ্রের চ্যালেঞ্জের দিকগুলো।

সমীক্ষা জানাচ্ছে এবারের বাজেট পেশের প্রেক্ষিত তিরিশ দশকের ব্রিটেনের প্রেক্ষিতের সঙ্গে খানিকটা মেলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে যে নিদারুণ আর্থিক অবক্ষয় ও সামাজিক সুরক্ষাহীনতার মধ্যে পড়েছিল ব্রিটেন, তার সঙ্গে করোনার পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া ভারতের কিছুটা মিল রয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা, বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষাহীনতার কাঁটাতার।

এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে একটি কমিটি গঠন করেছিল ব্রিটিশ সরকার। স্যার উইলিয়াম বেভারিজের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করেছিল ১৯৪২ সালে। দেশের সামাজিক সুরক্ষার কি পরিস্থিতি, তা উঠে এসেছিল সেই রিপোর্টে। “Social Insurance and Allied Services” শীর্ষক রিপোর্টে স্যার বেভারিজ দেখিয়ে ছিলেন কোন পথে হাঁটতে হবে দেশের অর্থনীতিকে। এই রিপোর্ট মূলত পরিচিত বেভারিজ রিপোর্ট নামেই।

এরপর সমীক্ষা রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে ভারতের প্রসঙ্গ। দেখানো হয়েছে করোনা পরবর্তী ভারতে সামাজিক সুরক্ষার কী অবস্থা, এরই সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে আর্থিক ভিত্তির নড়বড়ে চিত্রও। সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২১-২২ সালের বাজেটের সামনে একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বেভারিজ রিপোর্টে এই চ্যালেঞ্জগুলিকে ফাইভ জায়েন্ট বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে এই পাঁচ জায়েন্ট রয়েছে করোনা আবহের ভারতীয় অর্থনীতিতেও। এবারের বাজেট কি সেই পাঁচ জায়েন্টকে বধ করতে পারবে?

কী কী এই পাঁচ জায়েন্ট?

রিপোর্ট বলছে ১. দারিদ্র্য, ২. স্বাস্থ্য, ৩. শিক্ষার অভাব, ৪. গৃহহীনতা, ৫. বেকারত্ব। এই পাঁচটি হল ভারতীয় বাজেটের পাঁচ জায়েন্ট। জানানো হয়েছে করোনার কারণে চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) প্রতিটি ভারতীয়ের পকেট থেকে খোয়া গিয়েছে ১০,০০০ টাকা। কারণ জাতীয় আয়ের সাপেক্ষে মাথাপিছু বার্ষিক আয়ের অংকটা কমে যাচ্ছে প্রায় ১০,০০০ টাকা। ২০ সালে শেষ হওয়া অর্থবর্ষে বার্ষিক মাথাপিছু আয় ছিল ১.০৭ লক্ষ টাকা। সেটাই চলতি অর্থবর্ষে আনুমানিক হিসাব করে দেখা গিয়েছে মাথাপিছু বার্ষিক আয়ের অংকটা কমে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ৯৭,৮৯৯ টাকা।

পরিসংখ্যান কর্মসূচি ও রূপায়ন মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য এমনটাই জানাচ্ছে। যা সূচিত করছে স্বাস্থ্যগত এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সামগ্রিকভাবে ধাক্কা দেওয়ার পাশাপাশি করোনাভাইরাস অতি মহামারী সরাসরি প্রত্যেকের পকেটে হাত রেখেছে। দেখা যাচ্ছে এই হিসেব অনুসারে মাথাপিছু আয় ৮.৯ শতাংশ এবং মাথাপিছু জিডিপি ৮.৭ শতাংশ কমেছে।

লকডাউনের কারণে বেকারত্ব বৃদ্ধি, প্রধান প্রধান শিল্পক্ষেত্রে ক্ষমতার তুলনায় কম কাজ করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি চাহিদা কমে যাওয়ায় বছরের শুরু থেকেই আপামর ভারতীয়দের আয় ধাক্কা খেয়েছে। ভীষণভাবে শ্রমিক নির্ভর উৎপাদন, নির্মাণ,ব্যবসা, হোটেল ইত্যাদি ক্ষেত্রে ২০২০-২১ গোটা অর্থবর্ষে সংকোচন বিরাজ করছে। এবার দেখার কীভাবে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে কেন্দ্র সরকার।

Budget 2021-2022, Five main problems Of this budget season, Widespread unemployment, Challenge in Indian Economy, Finance Minister of India, Nirmala Sitharaman

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.