গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে করোনার প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়। প্রথমদিকে বেশি লোককে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু ক্রমশ আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। ২৪ জানুয়ারি সরকার জানায়, এখনও পর্যন্ত ২৭৭৭৬ টি সেশনে টিকা দেওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ ৩৭ হাজার মানুষকে। তার মধ্যে কেবল শনিবার ৩৩৬৮ টি সেশনে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ১২৩৮ জনের শরীরে ভ্যাকসিনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ যতজন টিকা নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ০.০৮ শতাংশ। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। মোট যতজন টিকা নিয়েছেন, তাঁদের ০.০০০৭ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে জানানো হয়, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে ছ’জন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তবে তাঁদের মৃত্যুর সঙ্গে ভ্যাকসিন নেওয়ার সম্পর্ক নেই।
প্রথম দিন টিকাকরণ শুরুর পরে মাত্র ১ লক্ষ ৯০ হাজার মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। ক্রমশ দৈনিক টিকাকরণের সংখ্যা বাড়তে থাকে। টিকাকরণের সপ্তম দিনে সাড়ে তিন লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হয়। ওইদিন যে স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়ার কথা ছিল না, তাঁদেরও অনেকে ভ্যাকসিন নিতে আসেন।
শনিবার দিল্লিতে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ৬১১১ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। দিল্লি সরকার স্থির করেছিল, মোট ৮১ টি টিকাকেন্দ্র থেকে রোজ ৮১০০ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রার ৭৫ শতাংশ পূরণ হয়েছে। দিল্লির চারটি বড় হাসপাতালে লক্ষ্যমাত্রার ১০০ শতাংশই পূরণ করা গিয়েছে। সেই চারটি হাসপাতাল হল এলএনজেপি, রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, জিটিবি হসপিটাল এবং দিল্লি স্টেট ক্যানসার ইনস্টিটিউট।
দিল্লিতে যাঁরা ভ্যাকসিন ইয়েছেন, তাঁদের অন্যতম হলেন রেণু গুপ্ত। তিনি পেশায় মাইক্রোবায়োলজিস্ট। শনিবার রাজীব গান্ধী হাসপাতাল থেকে তিনি টিকা নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি এসএমএস পাইনি। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত। হাসপাতাল থেকে বলল, আমাকে শনিবার ভ্যাকসিন দিতে পারবে।” পরে তিনি বলেন, “আমাদের থেকে যাতে কেউ সংক্রমিত না হয়, সেজন্যই আমাদের ভ্যাকসিন নেওয়া দরকার।”
নিউরো ফিজিওথেরাপিস্ট শুভম বলেন, “আমি কিছুদিন আগেই ভ্যাকসিন নিয়েছি। আমি প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে বলব, তাঁরা যেন উদ্যোগী হয়ে টিকা নেন। কোনও স্বাস্থ্যকর্মীই যদি টিকা না নেন, তাহলে বাকিদের কাছে কী বার্তা যাবে?”