শুভেন্দু অধিকারীকে সামনে দেখেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। অনুষ্ঠানের ফাঁকেই শুভেন্দুকে দেখে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। মাসখানেক আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো ডাকসাইটে এই নেতার প্রশংসায় মোদী বললেন, ‘‘শুভেন্দু তুম আচ্ছা কাম কর রহে হো।’’
বিজেপিতে নাম লিখিয়েই বড় ‘পুরস্কার’ পেয়েছেন। জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান করা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। সরকারি এই পদের মর্যাদা একজন মন্ত্রীর সমান। গত নভেম্বর মাসে মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে হাফ-ডজন তৃণমূল বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর দলবদলের দিন কয়েকের মধ্যেই তাঁরই হাত ধরে তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীও তৃণমূল ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে। শুভেন্দুর আরও এক ভাই তথা তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও দল ছাড়বেন বলে জল্পনা তুঙ্গে। শুভেন্দুর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গেও তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে।
বিজেপিতে যোগ দিয়েই প্রায় প্রতিটি সভায় শুভেন্দু অধিকারী তুলোধনা করছেন তাঁর পুরনো দলের। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমানে আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন শুভেন্দু। জেলায়-জেলায় সভা, মিছিল করছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারীর রোড শো, মিছিল, সভায় উপচে পড়া ভিড়ে বিধানসভা ভোটের মুখে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে বিজেপি। শুভেন্দুর দলে অন্তর্ভুক্তিতে বাংলায় দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়বে বলে আশাবাদী মোদী-শাহরা।
শনিবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এদিন বলেন, ‘‘আমার কাছে আবেগঘন মুহূর্ত। ছোটবেলা থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের নাম কানে আসতেই শক্তি পেতাম। ১২৫ বছর আগে দাসত্বের অন্ধকারে চেতনার জন্ম হয়েছিল।
দুনিয়ার শক্তিশালী শাসককে বলতে পেরেছিলেন, আমি তোমার কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইব না। ছিনিয়ে নেব। আজকের দিনেই নেতাজি সুভাষের জন্ম হয়নি, আত্মগৌরবের জন্ম হয়েছিল। ১২৫তম জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে প্রণাম করছি। বালক থেকে ত্যাগ ও তপস্যার মাধ্যমে নেতাজি হয়েছিলেন এই ভূমিকে। আমি এই পুণ্যভূমিকে প্রণাম করছি।’’
এদিন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের এই অনুষ্ঠানে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের সঙ্গে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথা বলেন শুভেন্দুর সঙ্গে। শুভেন্দু অধিকারীকে মোদী বলেন, ‘‘শুভেন্দু তুম আচ্ছা কাম কর রহে হো।’’