দেশ আত্মনির্ভর হচ্ছে, নেতাজির প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের প্রেরণা: ভিক্টোরিয়ায় মোদীর বক্তৃতার লাইভ হাইলাইটস

আজ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিবস। সেই উপলক্ষে শহরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুপুর সওয়া তিনটে নাগাদ রেসকোর্সে এসে নামে তাঁর হেলিকপ্টার। এর পরে তিনি নেতাজি ভবন গিয়ে, সেখান থেকে যান ন্যাশনাল লাইব্রেরি। তার পরে এসে পৌঁছন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। উদ্বোধন করেন একটি প্রদর্শনী গ্যালারির। এর পরে তাঁকে স্বাগত জানাতে করা হয় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

এর পরে বক্তৃতায় কী বললেন তিনি। দেখুন লাইভ হাইলাইটস।

জয় হিন্দ, জয় হিন্দ, জয় হিন্দ।
মঞ্চে উপস্থিত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয়, ভারতের গৌরব আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যদের পরিবার এবং বাংলার ভাইবোনেরা…
আমি আজ নেতাজির চরণে প্রণাম করছি। আর প্রণাম করছি প্রভাদেবীকে, যিনি নেতাজির জন্ম দিয়েছেন। আজ ওই পবিত্র দিনের ১২৫তম বর্ষ।
এখানে আসার আগে আমি ন্যাশনাল লাইব্রেরি গিয়েছিলাম। সেখানে আমি বুঝলাম, নেতাজির নাম শুনতেই যে কেউ গর্বে ভরে ওঠে। নেতাজির জীবনের গৌরব তাঁর সঙ্গে জুড়ে যায়। ওঁর আদর্শ, তপস্যা দেশের প্রতিটি যুবকের জন্য প্রেরণা।
আজ ভারত নেতাজির প্রেরণায় এগিয়ে চলছে। আমাদের কর্তব্য, ওর কীর্তিকে বারবার মনে করে নেওয়া।
হাওড়া-কালকা মেলের নাম নেতাজি এক্সপ্রেস করে দেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছর ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জয়ন্তীর দিন ‘পরাক্রম দিবস’ পালন হবে। কারণ নেতাজি দেশের পরাক্রমের প্রতিমূর্তি, প্রেরণাও।
আজ দেশ যখন আত্মনির্ভরতার সঙ্গে এগোচ্ছে, তখন নেতাজির প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের প্রেরণা। ওঁর মতো ব্যক্তিত্বের কাছে অসম্ভব কিছুই ছিল না।
উনি দেশের বাইরেও ভারতীয়দের চেতনা জাগিয়েছিলেন।
আজদ হিন্দ ফৌজর শক্তি মজবুত করেছিলেন।
নেতাজি বলেছিলেন, “ভারত ডাকছে। রক্ত ডাক দিয়েছে রক্তকে। ওঠো, দাঁড়াও, আমাদের নষ্ট করার মতো সময় নেই।”
এমন সাহসী হুঙ্কার কেবল নেতাজিই দিতে পারেন। উনি দেখিয়ে দিয়েছেন, যেখানে সূর্য কখনও অস্ত যায় না, ভারত তাকেও হারাতে পারে রণভূমিতে। উনি সংকল্প নিয়েছিলেন, ভারতের মাটিতে আজাদ সরকার গড়বেন।
অখণ্ড ভারতের প্রথম আজাদ হিন্দ সরকারের মুখ্য মানুষটি ছিলেন নেতাজি।
দেশের ভাবনাকে মর্যাদা দিয়ে নেতাজির ফাইলও আমরা সকলের জন্য খুলে দিয়েছি।
দেশ সদা-সর্বদা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, সবসময় থাকবে।
২০১৮ সালে দেশে আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছর পূর্তি পালন হয়েছিল।
নেতাজি দিল্লির লাল কেল্লায় পতাকা ওড়ানোর যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন দেশ পূরণ করেছে।
নেতাজির ঋণ কি আমরা কখনও চোকাতে পারব?
নেতাজি যখন ভারত ছাড়ার সিন্ধান্ত নিয়েছিলেন, ওঁর ভাইপো শিশিরকে ডেকে বলেছিলেন, “আমার একটা কাজ করতে পারবে?” এর পরে শিশির যেটা করেছিলেন, সেটা দেশের স্বাধীনতার একটা জরুরি পদক্ষেপ।
নেতাজি ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারছিলেন, বিশ্বযুদ্ধ যত জোরদার হবে, ভারতে ইংরেজদের শক্তিও তত কমবে।
এই সময়ে নেতাজি শিশিরকে দক্ষিণেশ্বরেও পাঠিয়েছিলেন মায়ের আশীর্বাদ আনতে।
আজ প্রতিটি ভারতীয় বুকে হাত রেখে যদি নেতাজিকে মনে করেন, তবে এই প্রশ্ন সকলের কানে বাজবে। আমার একটা কাজ করতে পারবে?
এই কাজই ভারতকে আত্মনির্ভর বানিয়েছে। এই কাজের সঙ্গে দেশের সব কিছু জুড়ে আছে।
নেতাজি বলেছিলেন, “আমাদের শক্তি থাকতে হবে, যা সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের লড়াই করতে বলবে। আমাদের উদ্দেশ্য ও শক্তি দুইই আছে আজ। আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে এই দিয়ে। আজ আমাদের কেবল একটি ইচ্ছে থাকা উচিত, ভারত যাতে বাঁচতে পারে, এগোতে পারে।”
নেতাজি বলেছিলেন, “নিজের প্রতি সত্য থাকলে বিশ্বের প্রতিও অসততা সম্ভব নয়। স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন কখনও হারিও না। বিশ্বে এমন কোনও শক্তি নেই, যা ভারতকে বেঁধে রাখবে।”
সত্যিই তাই। দুনিয়ায় এমন কোনও শক্তি নেই, যা ১৩০ কোটির দেশকে আত্মনির্ভর ভারত বানানো থেকে আটকেছে।
নেতাজি অশিক্ষা ও দারিদ্রকে সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে মানতেন। সামাজিক ভাবনা দিয়েই এর সমাধান সম্ভব।
আজ প্রতিটি গরিবের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা মিলছে।
দেশের কৃষকদের আধুনিক সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিক বানানো হচ্ছে। দেশে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি আসতে চলেছে।
আমি অনেকবার ভেবেছি, এই যে নতুন ভারত আকার নিচ্ছে, তা দেখে নেতাজি কত খুশি হতেন! পৃথিবীর সমস্ত ক্ষেত্রে উনি যখন ভারতকে এগিয়ে যেতে দেখতেন, ওঁর কেমন লাগত! আজ রাফালের মতো বিমান ভারতীয় সেনার হাতে। দেশের সেনাদের এই উন্নতি দেখে ওঁর কেমন লাগত! এত বড় মহামারীর সঙ্গে ভারত যে এমন জোরদার লড়েছে, ভ্যাকসিন বানিয়েছে, তা দেখে ওঁর কত না গর্ব হতো!
নেতাজি যেখান থেকেই আমাদের দেখছেন, আমাদের আশীর্বাদ করছেন ও স্নেহ দিচ্ছেন।
সবকিছু সরল ও সাধারণ হবে না। কিন্তু কিছু বিশ্বাস করলে, তা সফল করার জন্য পদক্ষেপ করতেই হবে। লক্ষ্য যদি সত হয়, তাহলে সাফল্য আসবেই। এ কথা নেতাজিই শিখিয়েছেন।
নেতাজি আত্মনির্ভর ভারতের পাশাপাশি সোনার বাংলারও স্বপ্ন দেখেছিলেন।
নেতাজির মতোই আমরাও সফল হওয়ার আগে থামব না। আপনারাও আপনাদের প্রয়াস জারি রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.