বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে পাথরবোঝাই ডাম্পার ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে অকালেই প্রাণ হারালেন ১৪ জন। মঙ্গলবার রাত ৯.৩০ মিনিট নাগাদ ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি শহরে, জলঢাকা সেতুর কাছে। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা ছাড়াও তিনটি শিশুও রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তিনটি ছোট গাড়িতে করে ধূপগুড়ির ময়নাতলি এলাকায় বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন কনেপক্ষের আত্মীয়রা। রাস্তা ফাঁকা থাকায় উল্টো দিকের লেন ধরেই গাড়িগুলি যাচ্ছিল। সেই সময় সঠিক লেন ধরেই উল্টো দিক থেকে ১০ চাকার একটি পাথরবোঝাই ডাম্পার ময়নাগুড়ির দিকে যাচ্ছিল।
জলঢাকা সেতুর কাছে কনেযাত্রীদের একটি গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে ডাম্পারটির। ফলে ডাম্পার ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে উঠে কাত হয়ে যায়। সেই সময় পাশ কাটিয়ে কনেযাত্রীদের বাকি দু’টো গাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করতেই ডাম্পারটি গাড়ি দু’টোর উপর উল্টে যায়। যাত্রী-সহ ডাম্পারের তলায় চাপা পড়ে যায় গাড়ি দুটো। খবর পাওয়া মাত্রই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন ধূপগুড়ি থানার আইসি। উদ্ধারকাজের জন্য নিয়ে আসা হয় বেশ কয়েকটি ক্রেন। দ্রুত উদ্ধারকাজের জন্য আরও পুলিশবাহিনী আসে। স্থানীয়রাও উদ্ধারকাজে হাত লাগান। ক্রেনে দিয়ে ডাম্পারটিকে তোলার পর পাথর সরিয়ে আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। আহতদের প্রথমে ধূপগুড়ি হাসপাতালে এবং পরে জলপাইগুড়ি হাসাপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ সূত্রের খববর, দুর্ঘটনাস্থলেই তিনটি শিশু-সহ ১২ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের পথে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতরা ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার, রানিরহাট মোড় এবং মালবাজারের ডামডিম এলাকার বাসিন্দা। এই দুর্ঘটনার জেরে এশিয়ান হাইওয়ে ৪৮-এ দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, “দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডাম্পারের চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আহতদের মধ্যে ৫ জন ধূপগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ১১ জন জলপাইগুড়ি জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।” প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, কনেযাত্রীদের গাড়িগুলি উল্টো লেন ধরে যাওয়ার ফলেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়। তিনি জানান, “দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জন মারা গিয়েছেন। গোটা বিষয়টি আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।”
2021-01-20