মাসের শেষে টানা ৩ দিন বাস ধর্মঘট রাজ্যে, দাবি না মানলে অনশনের পথে হাঁটবে সংগঠনগুলি

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং ডিজেলের উপর জিএসটি বসানো ও কর কমিয়ে দেওয়ার দাবিতে আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি রাজ্যজুড়ে বাস ও মিনিবাস পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল বেঙ্গল বাস, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস, জয়েন্ট কাউন্সিল-সহ বাস পরিবহণের একাধিক বেসরকারি সংগঠন।

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়েছে সংগঠনগুলি। সেই চিঠির প্রতিলিপি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবে তারা। অনশনেও বসবে। সংগঠনের এক সদস্যের কথায়, “সমস্তটাই চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যকে। এর পরে নির্বাচনী সূচি ঠিক করা হবে, তখন যেন এ বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়।”

কয়েক মাস আগেই করোনার কারণে বাস তেমন চলছিল না। তার উপর বাসের ভাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে এখন সমস্ত কিছু স্বাভাবিক হলেও বেশ কিছু বাসের ভাড়া বর্ধিতই আছে, যা নিয়ে প্রায়ই অশান্তি চলে বাস চালক ও যাত্রীদের মধ্যে। তার উপর আবার ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আগামী তিন দিনের বাস-মিনিবাস ধর্মঘট নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি করবে, সে কথা অনস্বীকার্য।

আজ, মঙ্গলবার দুপুরে বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলির বৈঠক বসে। সেই বৈঠকেই ধর্মঘটের পথ বেছে নেন মালিকরা। সংগঠনগুলির পক্ষে জানানো হয়েছে, কোভিড পরিস্থিতিতে বাস ও মিনিবাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ আগের মতো যাত্রী হচ্ছে না। তাই ভাড়া বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলির কর্তারা।

এদিন ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি প্রদীপ নারায়ণ বসু বলেন, “এর আগেও আমরা দাবি করেছিলাম। তার পরেও কোনও হেলদোল নেই। উল্টে রোজ শেয়ার মার্কেটের মতো ডিজেলের দাম বাড়ছে। তাই বাধ্য হয়ে এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত। জানি সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে, কিন্তু আমরা নিরুপায়। তাই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়েছে আমাদের। এতেও কাজ না হলে ১৫ তারিখ থেকে লাগাতার বড় আন্দোলন হবে।”

বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে অনেক দিন ধরেই গলা তুলেছেন বেসরকারি বাস মিনিবাসের মালিকরা৷ এর উপর ডিজেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে বাস চালিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বলেই দাবি তাঁদের৷ লকডাউনের পর রাজ্য সরকারের তরফে বেসরকারি বাস মিনিবাসের বর্তমান ভাড়া খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য সরকার৷ কিন্তু সেই কমিটির রিপোর্টও এখনও জমা পড়েনি বলে জানা গেছে। ফলে ভাড়া নিয়ে সমস্যা রয়ে গেছে যাত্রী ও মালিক দুই তরফেই। এমনই পরিস্থিতিতে এই তিন দিনের ধর্মঘট স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রীদের হয়রানি আরও বাড়াবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.