বিপ্লবী লালমোহন সেন : এই মহান মানুষটির জন্ম হয় ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামে। তার পিতার নাম ছিল অখিল চন্দ্র সেন। লালমোহন সেন বাল্যকাল থেকেই বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবার কাজে এগিয়ে যেতেন। তার পর তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের কর্মীও ছিলেন। যখন লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয় বিপ্লবী যতীন দাস বন্দি বিপ্লবীদের নিয়ে অনশন শুরু করেন। সেই অনশনের কারনে যতীন দাসের মৃত্যু হয়। যতীন দাসের মৃত্যুর স্মরণযাত্রার জন্য চট্টগ্রামে স্মরণযাত্রার আয়োজন করা হয়, আর সেই যাত্রায় অংশ নেন লালমোহন সেন।
এক সময় লালমোহনের সাথে বিপ্লবী আনন্দ গুপ্ত, অনন্ত সিং, গনেশ ঘোষ প্রবর্তকের সাথে যোগাযোগ হয় । এর মধ্যে লালমোহন প্রথম বিপ্লবীর দর্শনীয় হন। পরে তিনি যোগ দিলেন সশস্ত্র বিপ্লবের কাজে, সূর্য সেনের বিপ্লবী দলে। বিপ্লবের কাজে অনেক টাকার দরকার ছিল, কিন্তু লালমোহন সেন তার বাড়ি থেকে সিন্দুক ভেঙে টাকা জোগাড় করেন। ১৯৩০ সালের ১৮ ই এপ্রিল মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে যোগ দিলেন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলে। লালমোহন সেনের কাজ ছিল যাতে চট্টগ্রামে ব্রিটিশ পুলিস না আসতে পারে, তার পরিবহন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। কিছুদিন পর লালমোহন সেন ব্রিটিশ পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার হন।
এবার শুরু হল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমনের মামলা, এই মামলায় অনন্ত সিং, লোকনাথ বল, গনেশ ঘোষ, লালমোহন সেন, সুবোধ চৌধুরী, ফনিভুষণ নন্দী, আনন্দ গুপ্ত, সুবোধ রায় ও আরো অন্যান্য। এদের সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। পরে আন্দামান সেলুলার জেলে পাঠানো হয়।
লালমোহন সেন বিভিন্ন জেলে ১৬ বছর বন্দি থাকার পর ১৯৪৬ সালে মুক্তি পান। সেই সময় নোয়াখালীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়, লালমোহন সেন তার প্রতিরোধ ও শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করেন। তার জন্য তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ান, সন্দ্বীপে লালমোহন সেন শান্তি স্থাপনের কারনে বক্তৃতা দিতে যান সেখানে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।