উনিশের লোকসভায় ঝড় তুলে যেরকম কেন্দ্রে ফের ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি, ঠিক তেমনই অন্ধ্রপ্রদেশে ঝড় তুলেছে ওয়াইএসআর কংগ্রেস। বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে তেলুগু দেশম পার্টিকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছেন ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি। ফলপ্রকাশের পরেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। স্বভাবতই নতুন মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন জগন। তার আগে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন তিনি। জানা গিয়েছে, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা ও অন্ধ্রকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
সূত্রের খবর, মোদী-শাহের সঙ্গে অন্ধ্রকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া নিয়ে কথা বলার জন্যই মূলত এ দিন দিল্লি গিয়েছিলেন জগন। এ বারের নির্বাচনে তাঁর দলের প্রচারের প্রধান বিষয় ছিল অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ রাজ্যের তকমা দেওয়া। আগের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও বারবার এই কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি তা করতে না পারা এ বারের নির্বাচনে তাঁর হারের অন্যতম কারণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। তাই নির্বাচন মিটতেই আর অপেক্ষা করতে পারলেন না জগন। দেখা করতে চলে গেলেন মোদীর সঙ্গে।
তবে আগে যখন বারবার চন্দ্রবাবু এই বিশেষ রাজ্যের তকমা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছেন, তখন তাঁকে বলা হয়েছে, এই বিশেষ রাজ্যের তকমা শুধুমাত্র পাহাড়ি রাজ্যগুলোকেই দেওয়া হয়। এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত বেড়েছিল চন্দ্রবাবুর। এ বার সেই একই বিষয় নিয়ে কথা বলতে এলেন জগন। জানা গিয়েছে, এই বিষয় ছাড়াও রাজ্যের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়েও মোদী-শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে জগনের। অন্ধ্রপ্রদেশের আর্থিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে কেন্দ্রের কাছে নাকি সাহায্যও চেয়েছেন তিনি। যদিও এই বৈঠকের পর এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
লোকসভা ও রাজ্যসভা নির্বাচন একই সঙ্গে হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশে। ফলপ্রকাশের দিন দেখা যায়, চন্দ্রবাবুর তেলুগু দেশম পার্টির থেকে মুখ ফিরিয়েছে রাজ্যের মানুষ। ২৫টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২২টি পান জগন। অন্যদিকে ১৭৫টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৫২টি যায় তাঁর দলের দখলে। এই ভরাডুবির পর বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলাতেই পদত্যাগ করেন চন্দ্রবাবু।
শনিবার ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নেতা হিসেবে ফের জগনমোহন রেড্ডিকেই নির্বাচিত করা হয়। তাঁকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল। জানা গিয়েছে, ৩০ মে বিজয়ওয়াড়ার ইন্দিরা গান্ধী মিউনিসিপ্যাল স্টেডিয়ামে শপথ নেবেন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের বিধায়করা। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন জগন। তার আগেই অবশ্য ৭ নম্বর লোক কল্যাণ মার্গে মোদীর বাসভবনে গিয়ে দেখা করে এলেন জগন। এখন দেখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এলেন, সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেন কিনা।