কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে আগেই। দেশেই আরও চারটি ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। এই খবরও অজানা নয়। কিন্তু ভ্যাকসিন দৌড়ে ভারতের কোন কোম্পানি কোথায় রয়েছে জানেন কী?
ডিসেম্বরে জাইডাস ক্যাডেলার দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হয়েছিল। ইতিমধ্যেই এই কোম্পানিকে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ভারতের একমাত্র মেসেঞ্জার আরএনএ বেসড ভ্যাকসিন তৈরি করছে পুণের কোম্পানি জিনোভা। ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের ছাড়পত্র পেয়েছে এই ভ্যাকসিন।’
দেশে ভারত বায়োটেকের হাত ধরে আসতে চলেছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন। যা খুব শীঘ্রই প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে নাগপুরের গিলুরকর মাল্টি স্পেশালিটিতে। ভারত বায়োটেকের জানিয়েছে, তারা ন্যাজাল ভ্যাকসিনের উপর কাজ করছে। এর জন্য তারা ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। দুই ডোজের নিষ্ক্রিয় ডোজের বদলে তারা একক ডোজ নিয়ে কাজ করছেন। সংস্থার দাবি, গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে ন্যাজাল ভ্যাকসিন শ্রেষ্ঠ। কারণ নাকের মাধ্যমেই করোনা ভাইরাস আক্রমণ করে।’ ডাঃ চন্দ্রশেখর গিলুরকর বলেন, ‘পরবর্তী দু’সপ্তাহের মধ্যে আমরা ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করে দেব। এর ট্রায়ালের জন্য কমপক্ষে ৩০-৪৫ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন, যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হবে এবং ভুবনেশ্বর, পুনে, নাগপুর ও হায়দরাবাদ দেশের এই চার শহরে এই ট্রায়াল হবে।
ডিসেম্বরে বায়োলজিক্যাল ইভান্সের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল। মার্চে এই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনেরও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। ভারতেই স্পুটনিক ভি তৈরি হবে। ১৬ই জানুয়ারি যে ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া দেশ জুড়ে শুরু হচ্ছে, তার প্রথম তালিকাতেই রয়েছেন দেশের সব স্বাস্থ্যকর্মীদের নাম। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে মোদী জানান, প্রথম ধাপে ৩কোটিরও বেশি মানুষ ভ্যাকসিন পাবেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন দেশ করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকার জন্য গর্বিত। আসল যোদ্ধার মতো কাজ করেছেন তাঁরা। তাঁদের জন্যই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত ভারতে করোনা ছড়াতে পারেনি। একযোগে কাজ করেছেন প্রত্যেকে। সচেতনতা বজায় রেখেছেন। কেন্দ্রের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেশকে বহু প্রাণহানি থেকে বাঁচিয়েছে।
সোমবারের ভার্চুয়াল মিটিংয়ে মোদী জানান দ্বিতীয় দফয়া ৫০ বছর বয়সের উর্দ্ধে যারা, তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এছাড়াও ৫০ বছরের নীচে যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে. তাঁরাও এই দফায় ভ্যাকসিন পাবেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করছে কেন্দ্র। এদিকে, ইতিমধ্যে অবশ্য কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে ১৬ জানুয়ারি অর্থাৎ আগামী সপ্তাহ থেকেই ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে। শনিবার মোদীর সঙ্গে এক বৈঠকের পর এই ঘোষণা করা হয়। ভারতে ইতিমধ্যেই এমার্জেন্সি অথরাইজেশন বা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে অক্সফোর্ডের ‘কোভ্যাক্সিন’ যা ভারতে সেরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি হয়েছে ও ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘কোভিশিল্ড।’ ফলে এগুলি যে খুব তাড়াতাড়ি সাধারণ মানুষকে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমোদন পাবে, এমনটাই আশা করা যাচ্ছে।