হাতে পড়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরই শেষ হবে প্রতীক্ষার পর্ব। তার আগে মঙ্গলবার ভোররাতে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোভিশিল্ড পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল। প্রথম দফায় তিনটি ট্রাক বোঝাই টিকা পাঠানো হচ্ছে। যা বিমানে করে দেশের ১৩ টি জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হবে।
সোমবার বিকেলের দিকে টিকা কেনার জন্য সেরামের সঙ্গে সরকারিভাবে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কেন্দ্র। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা পৌঁছে দেওয়ার জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছিল। বন্দোবস্ত করা হয়েছিল কড়া নিরাপত্তার। বিকেল থেকেই আসতে ট্রাক আসতে শুরু করে সেরামের কার্যালয়ে।
সেইমতো মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার আগেই পুণের মঞ্জরিতে সেরামের কার্যালয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়। নারকেল ফাটান পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নম্রতা পাটিল। তারপর সেরামের কর্মীদের তুমুল হাততালির মধ্যে ভোর ৪ টে ৫৫ মিনিট কোভিশিল্ড বোঝাই তিনটি ট্রাক পুণে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। বিমানবন্দর পর্যন্ত নিরাপত্তা প্রদান করে পুলিশ। ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট নাগাদ থেকে বিমানবন্দরে শুরু হয় টিকা নামানোর কাজ। সেখানে মোতায়েন ছিলেন সিআইএসএফ জওয়ানরা।
টিকা বণ্টনের সঙ্গে যুক্ত এক সূত্র সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, তিনটি ট্রাকে ৪৭৮ বক্স টিকা আছে। প্রতিটি বাক্সের ওজন ৩২ কেজি। সেরামের দুটি ট্রাক আছে। একটি ট্রাক হচ্ছে পুণের কুল-এক্স কোল্ডচেনের। যারা টিকা বণ্টনের দায়িত্ব পেয়েছে। ট্রাকগুলির তাপমাত্রা মাইনাস ২৫ ডিগ্রি থেকে ২৫ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আছে।
পুণে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানে করে কোভিশিল্ড পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা এসবি লজিস্টিকের সন্দীপ ভোঁসলে জানিয়েছেন, পুণে বিমানবন্দর থেকে প্রথম উড়ানটি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে। যা সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে দিল্লিতে অবতরণ করবে। সবমিলিয়ে আটটি বাণিজ্যিক উড়ানে (দুটি পণ্যবাহী এবং বাকিগুলি যাত্রীবাহী) টিকা পাঠানো হচ্ছে। সকাল ১০ টার মধ্যে প্রথম দফায় পুণে থেকে কোভিশিল্ড পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, আপাতত দিল্লি, কলকাতা, আমদাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, কারনাল, হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া, গুয়াহাটি, লখনউ, চণ্ডীগড় এবং ভুবনেশ্বরে কোভিশিল্ড পৌঁছে যাবে। প্রথম পণ্যবাহী বিমানে টিকা পাঠানো হবে হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া এবং ভুবনেশ্বরে। দ্বিতীয় পণ্যবাহী উড়ানে কোভিশিল্ড এসে পৌঁছাবে কলকাতা এবং গুয়াহাটিতে। সড়কপথে মুম্বইয়েও পাঠানো হবে কোভিশিল্ড।
বাংলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতায় পৌঁছাবে টিকা। প্রথম দফায় ৬৮,৯০০ ভায়াল আসছে রাজ্যে। ওই পরিমাণ টিকার মাধ্যমে প্রায় সাত লাখ ডোজ প্রদান করা যাবে। সেই টিকার একাংশ বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোর্সে নিয়ে যাওয়া হবে। যা কলকাতা এবং জেলা মিলিয়ে ৯৪১ টি কেন্দ্রে পাঠানো হবে। বিমানবন্দর থেকে বাকি টিকা পাঠানো হবে হেস্টিংসে কেন্দ্রের গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল স্টোর্স ডিপোতে। সেখান থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে টিকা পাঠানো হবে।