কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লি সীমান্তে লাগাতার চলছে কৃষক আন্দোলন। সরকারের সঙ্গে আট দফা বৈঠকেও কাটেনি কৃষি জট। কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কৃষক নেতারা। আজ সোমবার সেই মামলারই শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে। কৃষি আইনের বৈধতা থেকে শুরু করে দিল্লি সীমান্তে কৃষক বিক্ষোভ, সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখবে আদালত।
এদিকে, আন্দোলনের চাপে কিছুটা সুর নরম করে কৃষি আইন সংশোধনে সম্মতি জানিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়তে নারাজ প্রতিবাদী কৃষকরা। তাঁদের দাবি, এই তিন কৃষি আইন সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। আজ এই মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে৷
গত ৭ জানুয়ারি কৃষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল কেন্দ্র৷ কিন্তু সেই বৈঠকও ছিল নিস্ফলা৷ আগামী ১৫ জানুয়ারি ফের আলোচনার টেবিলে ফের মুখোমুখি হবে দুই পক্ষ৷ এর আগে আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷
গত ৬ জানুয়ারি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ শুনতে রাজি হয় শীর্ষ আদালত৷ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় ১১ জানুয়ারি৷ এদিকে, অষ্টম দফা বৈঠকের পর বিক্ষুব্ধ কৃষকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিন নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত বাড়ি ফিরবেন না তাঁরা৷
শেষ শুনানির দিন কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, কৃষি আইন নিয়ে কৃষক নেতাদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা সুষ্ঠ পথেই এগোচ্ছে৷ খুব শীঘ্র এই সংকট কাটিয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হবে বলেও আশ্বস্ত করেছিল৷ অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, “আমরা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করছি। উভয়ের মধ্যে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ দুই পক্ষের সমঝোতার সম্ভাবনার ভিত্তিতেই ১১ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে শীর্ষ আদালত৷
সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ‘‘আমরা পরিস্থিতি বুঝতে পারছি৷ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের উপরই আমারা গুরুত্ব দিচ্ছি৷’’ এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘‘কোনও রকম বাধা ছাড়াই কৃষকদের প্রতিবাদ করার অনুমতি দিতে হবে৷ এই আন্দোলন মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে৷’’
গত ২৬ নভেম্বর থেকে দিল্লি সীমান্তে একইভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকরা৷ প্রবল ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেই চলছে তাঁদের লড়াই৷ সেপ্টেম্বর মাসে তিনটি কৃষই আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে শুরু করে৷ কৃষকদের দাবি, এই আইনে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) থেকে বঞ্চিত হতে হবে তাঁদের৷ যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে কেন্দ্র৷