দেশজুড়ে এখনও করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। এর মধ্যেই করোনার নয়া স্টেনের আতঙ্ক। এই অবস্থায় আপাতত গোটা দেশেই চলছে বাড়ি থেকে কাজ। চলছে অনলাইনেই স্কুল-কলেজ। কিন্তু অনলাইনে স্কুল-কলেজ চললেও ইন্টারনেটের সমস্যা রয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বড়সড় স্বস্তির ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর।
পড়ুয়াদের জন্যে প্রত্যেকদিন ২ জিবি করে ডেটা দেওয়ার সিদ্ধান্ত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী। আজ রবিবার এই সংক্রান্ত ঘোষণা করেছেন তিনি। ঘোষণা অনুযায়ী, প্রত্যেকদিন ৯ লক্ষ কলেজ পড়ুয়া এই সুবিধা পাবেন।
যেখানে প্রত্যেকদিন ২ জিবি ডেটা দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। এই মাস অর্থাৎ জানুয়ারি থেকেই এই সুবিধা পাবেন পড়ুয়ারা। অনলাইনে ক্লাস করতে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন পড়ুয়ারা।
এই সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে। এই মুহূর্তে তামিলনাড়ুর একাধিক সরকার কলেজ তো বটেই, পাশাপাশি আর্টস, সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং,পলিটেকনিক কলেজে এই মুহূর্তে অনলাইন ক্লাস চলছে। করোনা পরিস্থিতির কথা বিচার করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে ইউজি এবং পিজি’র ফাইনাল পড়ুয়াদের জন্যে কলেজ খোলা হলেও একটা বিশাল অংশের পড়ুয়া এখনও অনলাইনেই পড়াশুনা চালাচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে বড় সমস্যা ইন্টারনেট। আর সেই সমস্যা সমধানে এগিয়ে এসেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।
আজ রবিবার এই বিষয়ে আলোচনা করেন। আর তা করার পরেই পড়ুয়াদের ইন্টারনেট দেওয়ার কথা জানান। তাঁর কথা মতো আগামী ২০২১ এপ্রিল মাস পর্যন্ত ২ জিবি করে ডেটা দেওয়া হবে বিনামূল্যে। আর তাতে উপকৃত হবেন লক্ষাধিক পড়ুয়া।
উল্লেখ্য, সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ দেখা দিচ্ছে না। গত বছর অক্টোবরের শেষার্ধ। ৪ কোটি পেরিয়েছিল গোটা বিশ্বের করোনা সংক্রমণ। এর পরে তিন মাসও পুরো কাটেনি। সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। ৯ কোটি ছুঁতে চলেছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা (৮ কোটি ৯৭ লক্ষের বেশি)। মাঝের ক’টা মাসে প্রতিষেধক তৈরি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র মিলেছে। টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে প্রথম সারির দেশগুলোতে।
কিন্তু সংক্রমণ কমার তো লক্ষণ নেই, বরং ঝড়ের গতিতে বেড়েই চলেছে। সংক্রমণ তালিকার শীর্ষে আমেরিকা। ২ কোটি ২৪ লক্ষ সংক্রমণ। মৃত্যুতেও তারা প্রথম। ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার প্রাণ গিয়েছে করোনায়। দৈনিক সংক্রমণই ২ লক্ষের আশপাশে ঘুরছে। সেই সঙ্গে রেকর্ড সংখ্যক দৈনিক মৃত্যু (গড়ে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি)। সংক্রমণ বেড়েছে ইউরোপেও।
ব্রিটেন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ফ্রান্স, জার্মানিতে কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। কানাডাতে দীর্ঘ লকডাউনের পরে শোনা যাচ্ছে কার্ফু জারি করা হবে। সন্ধে থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত কার্ফু চলবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোলেই বড় অঙ্কের জরিমানা। ও দিকে, চিন আবার দু’টি শহরকে ‘তালাবন্ধ’ করেছে। বেজিংয়ের দক্ষিণে শহর দু’টিতে সবরকম পরিবহণ বন্ধ। বাকি বিশ্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে তাদের।
এ দিকে, ‘ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সুস্থ হয়ে ফেরা করোনা-রোগীদের চার জনের মধ্যে তিন জনের শরীরে ছ’মাস পরেও করোনার উপসর্গ রয়ে গিয়েছে। উহানের কয়েকশো রোগীকে নিয়ে গবেষণা চালান বিজ্ঞানীরা।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ক্লান্তি ও পেশির যন্ত্রণা থেকে গিয়েছে ছ’মাস পরেও। অনেকে আবার নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন। এই অবস্থায় ভারতের মতো দেশে আগামী কয়েকমাস ওয়ার্ক ফ্রম হোম কিংবা অনলাইনেই সবাইকে ক্লাস করার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।