কেন্দ্র বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে, সেটাকে ‘টিকাশ্রী’ প্রকল্প বলে না চালিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী, কটাক্ষ শুভেন্দুর

আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশের নানা প্রান্তে কোভিডের টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল, শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করা হয়, ৩ কোটি ফ্রন্টলাইনার স্বাস্থ্যকর্মীকে বিনামূল্য টিকাকরণ করা হবে। কিন্তু এর পরেই দেখা যায়, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে একটি চিঠি পৌঁছেছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার তাঁদের কাছে বিনামূল্য ভ্যাকসিন পৌঁছে দেবে।

রবিবার সকালে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছিলেন অমিত মালব্য। বিকেলেই ফের এ নিয়ে মমতাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী।

এদিন পুরুলিয়ার কাশীপুরে শুভেন্দুর একটি রোড শো ছিল। তার পরে জনসভাও করেন তিনি। সেই সভার মঞ্চে তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, “কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পগুলো এই রাজ্যের সরকার বেমালুম নিজেদের বলে চালিয়ে দেয়, এত বড় মিথ্যেবাদী। কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রথমে ৩ কোটি ফ্রন্টলাইনার স্বাস্থ্যকর্মী ও পরে ৫০ বছরের বেশি বয়সি ২৭ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। তার পরেই আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি দেখলাম। আমি তো ভাবছিলাম কেন্দ্রের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার এই প্রকল্পকে এরা ‘টিকাশ্রী’ প্রকল্প বলে না চালিয়ে দেয়।”

শুভেন্দু একথা বলতেই সভাস্থলে হাসির রোল ওঠে। প্রাক্তন মন্ত্রী আরও বলেন, “এই সরকার পুরো মিথ্যেবাদী সরকার। কিছু না করেই বলে ১০০ শতাংশ করে দিয়েছি। এই যে সাঁওতালি ভাষাকে অষ্টম তফসিলে জায়গা দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী, তা নিয়ে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওই ভাষায় নাকি পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। পাঠ্যবইই হল না, আর পরীক্ষা!” তাঁর কথায়, “১৯ তারিখে উনি এখানে আসবেন। তার পরে দেখবেন এরকম আরও মিথ্যাশ্রী ও কুতসাশ্রী চলছে।”

টেট পরীক্ষার দুর্নীতি নিয়েও এদিন তীব্র সমালোচনা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট জমানায় ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি কাউন্সিল গঠন হয়েছিল। ফলে জেলার ছেলেরা সেই জেলার প্রাথমিক স্কুলেই চাকরি পেত। তৃণমূল জমানায় ব্রাত্য বসু যখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, তখনও পর্যন্ত সেই ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তার পরে একজনকে শিল্প মন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়। তিনি এসে সব তুলে দেন। সবটাই হয়ে যায় কলকাতার হাতে কুক্ষিগত।”

শুভেন্দু সরাসরি অভিযোগ করেন, এর পরেই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি শুরু হয়। টাকার বিনিময়ে নিয়োগ করে বস্তা বস্তা অর্থ পৌঁছে যায় কলকাতায়।

পাশাপাশি, এদিনের সভা থেকেও এ রাজ্যের কয়লা, বালি পাচারের বিরুদ্ধে সরব হন শুভেন্দু। তিনি আরও বলেন, “পুরুলিয়া জেলার বিধানসভায় ৯টি আসন রয়েছে। এবার ভোটে ৯-০তে হারবে তৃণমূল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.