করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তাতে অর্থনীতি ও বাণিজ্য রীতিমতো ধাক্কা খায়। যার ফলে ভারতের অর্থনীতিতে ১৯৫২ সালের পর সবচেয়ে বড় সংকোচনের মুখে পড়তে চলেছে। হিসেব করে অনুমান করা হচ্ছে ৭.৭ শতাংশ সংকোচন হতে পারে ২০২১ সালের মার্চ মাসে শেষ হওয়া অর্থবর্ষে। বৃহস্পতিবার সংখ্যাতত্ত্ব মন্ত্রকের এই বছর সম্পর্কে প্রাথমিক হিসেব প্রকাশ করেছে।রিজার্ভ ব্যাংক কিছুদিন আগে ৭.৫ শতাংশ সংকোচনের কথা বলে ছিল।
এই আনুমানিক হিসেব পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে অতি মহামারীর কারণে যেসব পদক্ষেপ নিতে হয়েছে তার প্রভাব বলে মন্ত্রক অফিস সূত্রে জানানো হয়। বিশেষত দেশজুড়ে লকডাউন চলাকালীন এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ স্তব্ধ ছিল।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে লকডাউন জারি করা হয়েছিল তবুও ভারত পৃথিবীর মধ্যে করোনা সংক্রমনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় দেশ। ১০.৪ মিলিয়নের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। লকডাউন থেকে আবার আনলক করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করা হচ্ছে। ১৯৮০ সালের পর অর্থাৎ চার দশক পর ফের অর্থনীতিতে সংকোচন দেখা দিয়েছে। ওই বছর ৫.২ শতাংশ সংকোচন হয়েছিল।
লকডাউন এর আগে থেকেই অবশ্য অর্থনীতিতে ধীরগতি দেখা গিয়েছিল। যার জন্য গত অর্থবছরের জিডিপি বৃদ্ধির হার গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ৪.২ শতাংশ। অর্থবর্ষে ত্রৈমাসিক ভিত্তিক হিসাবেও এই অধোগতির ইঙ্গিত মিলেছে। বিশেষত লকডাউনের জন্য কল কারখানা ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকায় সংকটে থাকা অর্থনীতির উপর বোঝা আরও বেড়ে যায়। লকডাউন থেকে আনলক করা হলেও জিডিপি বৃদ্ধির হার ধীরলয়ে থাকছে।
সরকারি তথ্য অনুসারে দেখা গিয়েছে আর্থিক ক্ষেত্রে অধোগতি সবচেয়ে বেশি উৎপাদন শিল্পে। সেখানে অধোগতির হার হল ৯.৪ শতাংশ। গতবছর শিল্প বৃদ্ধির হার কমে হয়েছিল ০.০৩ শতাংশ । ফলে এই মহামারী একেবারে আরও কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে উৎপাদন ক্ষেত্রে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে হোটেল পরিবহন ছোট ব্যবসা ইত্যাদিতে এখনও তেমন কর্মতৎপরতা শুরু হয়নি। ফলে এই সব ক্ষেত্রে বৃদ্ধির সম্ভাবনা তেমন নেই বললেই চলে। নির্মাণ শিল্পে অধোগতি ১২.৬ শতাংশ। সব মিলিয়ে কর্ম সংস্থানের ছবিটাও তেমন ভালো নয়। কর্ম সংকোচন হচ্ছে। লোকের আয় কমছে। নতুন বিনিয়োগের তেমন কোনো ইঙ্গিত এখনও মিলছে না।