আতঙ্কের মধ্যেও স্বস্তির খবর! বাংলায় ২-১ দিনেই আসছে টিকা৷ আগামী ৮ জানুয়ারি দেশের সর্বত্র টিকাকরণের ‘ড্রাই রান’ চালাবে কেন্দ্র। সেই তালিকায় নাম রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের৷ তাই সারা দেশের পাশাপাশি এই রাজ্যেও টিকা পাঠাচ্ছে কেন্দ্র৷ এই মর্মে বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনে এল কেন্দ্রের চিঠি৷
কেন্দ্রের চিঠি পাওয়ার পর তোড়জোড় শুরু করেছে রাজ্য সরকার৷ টিকাকরণের জন্য প্রতিটি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞপ্ত জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে জেলা স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অতি দ্রুত রাজ্যে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। কোভিশিল্ড অথবা কোভ্যাকসিনের যেকোনও একটি দেওয়া হতে পারে। প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক টিকাকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন। জেলাস্তরে টিকা সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি সিএমওএইচ-২।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ৩ জানুয়ারি অ্যাপ্রুভাল দেওয়া হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি। তবে, এই সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে হবে। ইতিমধ্যে কোভিশল্ড ও কোভ্যাক্সিনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিজিসিআই। এই দুই ভ্যাকসিন কোন বয়সের কাকে দেওয়া হবে সেই বিষয়েও জানানো হয়েছে।
তবে এই ভ্যাকসিন কীভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে গত রবিবার ২ জানুয়ারি দেশজুড়ে মহড়া হয়। রাজ্যের ৩ জায়গায় করা হয় ভ্যাকসিনের ড্রাই রান। বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত দত্তাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মধ্যমগ্রাম পুরসভার অন্তর্গত আর্বান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার ফোরে, এবং আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে হল টিকাকরণ প্রক্রিয়ার মহড়া।
প্রত্যেক জায়গায় ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী অংশ নেন মহড়ায়। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে বসানো হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। তারপর এক একজন করে তাঁদের প্রথমে ডেকে নেওয়া হয়।
ওয়েটিং রুমে, সেখানে হয় নথি পরীক্ষা। এরপর নিয়ে যাওয়া ভ্যাকসিনেশন রুমে সেখানে হয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর স্বাস্থ্যকর্মীকে রাখা হয় অবজার্ভেশন রুমে। মহড়া চলাকালীন আইসিএমআরের পোর্টাল খুলতে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা হয়েছে তা নথিভুক্ত করা হয়। স্বেচ্ছাসেবকদের কী কী প্রশ্ন ছিল তাও নথিভুক্ত করা হয়। সূত্রের খবর, এই নিয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ৮ জানুয়ারি টিকাকরণের ‘ড্রাই রান’এর পর চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ভ্যাকসিন আসতে পারে। প্রস্তুত হতে জেলাগুলিকে দেওয়া হয়েছে নির্দেশ। কলকাতা-সহ দেশের ৪ জায়গায় ভ্যাকসিন মজুত করার জন্য বড় কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রথম দফায় ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ ভ্যাকসিনের ডোজ আসবে।
অতিরিক্ত ঝুঁকিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হবে ভ্যাকসিন। এরপর প্রোটোকল অনুযায়ী বাকিদের দেওয়া হবে। যদিও পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলাতে পারে পরিকল্পনা বলেও জানা গিয়েছে।