একই দিনে দু’বার আদালতে ধাক্কা খেলেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সকালে সুপ্রিম কোর্টে, তার পর সন্ধ্যায় বারাসত জেলা আদালতে। আগাম জামিনের আবেদন ত্রুটিপূর্ণ থাকায় তা খারিজ করে দেন বিচারক কেসাং ডোমা ভুটিয়া। নতুন করে আবেদম জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বারাসাত আদালতের আইনজীবী মিহির দাস জানান , নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদনটি জমা না পড়ায় এবং সঠিক ভাবে এভিডেভিট না হওয়ায় রাজীব কুমারের আবেদন বাতিল হয়েছে।
ব্যাপারটা এখানেই থামেনি। এর পর নাটকীয় মোড় নেয়। হাওড়া আদালতে আইনজীবীদের মারধরের ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে তাঁদের কর্মবিরতি চলছে। কাল তা উঠে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ দিন কর্মবিরতির মধ্যে বারাসত আদালতে রাজীবের আইনজীবী আবেদন জমা দেওয়ায় ক্ষেপে যান সেখানকার বাকি আইনজীবীরা। সন্ধ্যায় দেখা যায় তাঁরা আদালত চত্বরে স্লোগান তুলছেন।
একবার আবেদন খারিজ হলে, ৬ ঘন্টার মধ্যে নতুন আবেদন আদালতে পেশ করা যায়। কিন্তু বারাসত আদালতের একাংশ আইনজীবী এ দিন বলেন, দরকার হলে তাঁরা সারা রাত পাহারা দেবেন। কিন্তু বারাসত আদালতে কোনও আইনজীবী যাতে আবেদন পেশ করতে না পারেন তা নিশ্চিত করবেন। ফলে গোটা বিষয়টা নিয়ে এখন প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিটফান্ড মামলায় রাজীব কুমারকে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রক্ষাকবচের মেয়াদ আজ শুক্রবারই শেষ হচ্ছে। সেই মেয়াদ বাড়াতে চেয়ে এ দিন সকালে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন রাজীব কুমারের আইনজীবী। কিন্তু বিচারপতি অরুণ মিশ্র সেই আবেদন শোনা মাত্র খারিজ করে দেন। বলেন,সুপ্রিম কোর্ট আর তাঁকে রক্ষাকবচ দেবে না। আগাম জামিনের জন্য নিম্ন আদালতেই যেতে হবে। এমনকি বিচারপতি এও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলছে বলে যে অজুহাত দিচ্ছেন, তা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। রাজীব কুমার সিনিয়র আইপিএস অফিসার। উনি নিজেই কেন আদালতে গিয়ে আবেদন জানাচ্ছেন না।
সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের পর এ দিন বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আবেদন পেশ করেন রাজীব কুমারের আইনজীবী। আজ রাত ১২ টার মধ্যে রাজীবের আবেদন আদালতে গৃহীত না হলে, তাঁর সঙ্কট বাড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এমনিতে রাজীবের বিরুদ্ধে এখনও কোনও এফআইআর দায়ের করেনি সিবিআই। তাঁকে শিলংয়ে সিবিআই দফতরে টানা পাঁচ দিন জেরা করেছে মাত্র। তবে রক্ষাকবচের মেয়াদ শেষ হলে সিবিআই রাজীবকে ফের জেরার জন্য ডাকতে পারে। তার পর তখনই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে হেফাজতে নিতে পারে।
এখন দেখার রাজীবকে ঘিরে এই টানাপড়েন শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়।