প্রশ্নাতীত জনাদেশ পেয়েও নরেন্দ্র মোদী পা ছুঁইয়ে রাখলেন মাটিতে। নির্বাচনের আগে তাঁর রাজনৈতিক গুরু’র সঙ্গে যে মনোমালিন্য ঘটেছিল তার অবসান করলেন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। দেড়মাস ধরে চলা রাজনৈতিক যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি অমিত শাহকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদী দেখা করলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী ও মুরলী মনোহর যোশীর সঙ্গে।
গান্ধীনগরে আডবাণী’র সঙ্গে দেখা করার ছবি দিয়ে নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানান, ”আডবাণীজির সঙ্গে দেখা করলাম। বিজেপি’র আজকের সাফল্যের কারণ ওনার মতো মহান ব্যক্তিরা বছরের পর বছর পার্টিকে গড়ে তোলার জন্য ব্যয় করেছেন এবং মানুষকে দিয়েছেন নতুন রাজনৈতিক আদর্শের বয়ান।”
দীর্ঘদিনের লোকসভা কেন্দ্র গান্ধীনগর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্মতি আডবাণীকে না দেওয়ার পেছনে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা রয়েছে এমন একটি অভিযোগের ইঙ্গিত তাঁর রাজনৈতিক শিষ্যের প্রতি করেছিলেন স্বয়ং ‘লৌহপুরুষ’। আডবাণীর নিজস্ব দুর্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যখন নিজের সেনাপতির নাম ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী তখন নিজের হতাশা এবং ক্ষোভ গোপন করার কোনও চেষ্টাই করেননি দেশের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী। বিষয়টি রাজনৈতিক মহল এবং সংবাদ মাধ্যমের কাছে যথেষ্ট আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল। সেই গান্ধীনগর থেকেই অমিত শাহ’র ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার ভোটের রেকর্ড ব্যবধানে জয়লাভ ও এককভাবে বিজেপি’র ৩০৩টি আসন দখল করার ঘোষণা হওয়ার পরই পুরনো দূরত্ব কমিয়ে আনার প্রশস্ত সময় বলে মনে করেছেন মোদী, এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
আডবাণী’র সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার সেরে মোদী–শাহ জুটি দেখা করেন আর এক অভিমানী প্রবীণ নেতা মুরলী মনোহর যোশীর সঙ্গে। কানপুরের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে তিনিও প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন এবং সেই ক্ষোভের অভিমুখ ছিল প্রধানমন্ত্রীর দিকেই। মুরলী মনোহর যোশীর সঙ্গে দেখা করার ছবি দিয়েও প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন। ”ড. মুরলী মনোহর যোশী অত্যন্ত পণ্ডিত ও উল্লেখযোগ্য একজন বুদ্ধিজীবী। ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি সবসময়ই বিজেপি–কে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে গেছেন এবং তিনি আমার মতো অজস্র কর্মীর পরামর্শদাতা। আজ সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করে ওনার আশীর্বাদ চেয়েছি।”
বিজেপি’র এই বিপুল জয়ের জন্য নরেন্দ্র মোদীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে লালকৃষ্ণ আডবাণী বৃহষ্পতিবারই একটি বিবৃতি দেন।