কোভিড আবহে অবশেষে জেলা বিচারকদের নির্দেশ অনুযায়ী কালীঘাট মন্দিরে গর্ভগৃহে প্রবেশাধিকার মিলেছে দর্শনার্থীদের। কিন্তু মঙ্গলবারের ওই নির্দেশের পরে ভক্ত এবং সেবায়েতদের সঙ্গেই অবাধে মন্দিরে ঢুকে যাচ্ছে পুজোর ফুল, শালপাতা, প্রসাদ। এর ফলে তার থেকে ফের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন অনেকে।
লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পরে গত ১ জুলাই থেকে সর্বসাধারণের জন্য খোলা হয়েছিল কালীঘাট মন্দির। এত দিন কোভিড-বিধি মেনে শুধুমাত্র মূল মন্দিরের বারান্দা থেকেই বিগ্রহ দর্শন করতে পারতেন ভক্তেরা। সংক্রমণের ভয়ে ফুল, শালপাতা, পুজোর প্রসাদ কোনও কিছুরই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ওই নিয়মগুলি মেনেই মন্দির পরিচালনা করা হচ্ছিল।
সম্প্রতি জেলা বিচারকের দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে গর্ভগৃহে প্রবেশাধিকার মিলেছে দর্শনার্থীদের। কিন্তু সেই নির্দেশে ফুল, শালপাতা, সিঁদুর নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে বলা হয়নি। কিন্তু অভিযোগ, ওই নির্দেশ আসার পরেই মন্দিরের ভিতরে ফুল-শালপাতা নিয়ে অবাধে প্রবেশ করছেন দর্শনার্থী এবং সেবায়েতরাও।
জেলা বিচারকের দফতর সূত্রের খবর, ওই নির্দেশে শুধুমাত্র গর্ভগৃহে জনসাধারণের প্রবেশের কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কালীঘাট মন্দিরে দর্শনার্থীদের দু’নম্বর দরজা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে চার নম্বর দরজা দিয়ে বার করা হচ্ছে। দু’নম্বর গেটে দর্শনার্থীদের জন্য জীবাণুমুক্তকরণ চ্যানেল ও দেহের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সঙ্গে থাকা ফুল-শালপাতা জীবাণুমুক্ত করানোর কোনও ব্যবস্থা সেখানে নেই। ফলে সেবায়েত কাউন্সিলের সদস্যদের একাংশের বক্তব্য, ভক্তদের হাতে থাকা শালপাতা-ফুল থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা ফের তৈরি
গত দু’মাসে মন্দির সংলগ্ন এলাকায় অনেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি মন্দিরের ৫ নম্বর গেটের উল্টো দিকের দু’টি বাড়ির বাসিন্দা কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারাও গিয়েছেন। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ফুল ও পুজোর সামগ্রী জীবাণুমুক্ত না করিয়েই সরাসরি গর্ভগৃহ পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় সংক্রমণের আশঙ্কা যে আগের থেকেও কয়েক গুণ বেড়েছে, তা মানছেন সকলেই।
জীবাণুমুক্ত না করেই ফুল-পাতা-প্রসাদ নিয়ে মন্দিরে ঢোকা প্রসঙ্গে সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতার বাইরে দার্জিলিঙে আছি। কয়েক দিনের মধ্যে কলকাতায় ফিরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’’ কালী টেম্পল কমিটির কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ হালদার বলেন, ‘‘জেলা বিচারকের নির্দেশ খতিয়ে দেখে সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুযায়ী জীবাণুমুক্তকরণের কী ব্যবস্থা করা যায়, তা দেখতে হবে। কোনও একটা ব্যবস্থা তো নিতেই হবে।’’