ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ডের টিকাকে ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া। তারপরেই নীতি আয়োগ জানিয়েছে, ৬ মাসে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। আজ থেকেই দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫১৭টি জেলায় শুরু হয়েছে কোভিড ভ্যাকসিনের ড্রাই রান। কিন্তু কারা আগে ভ্যাকসিন পাবেন, সেটা নির্ভর করছে কাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তার উপর, এমনটাই জানালেন ইল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস বা এইমস প্রধান ডক্টর রণদীপ গুলেরিয়া।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে গুলেরিয়া বলেন, “আমি একটা কমিটির চেয়ারম্যান। যাঁদের শরীরে কো-মর্বিডিটি রয়েছে তাঁদের আগে টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই কো-মর্বিডিটি দেখে আমরা একটা ডেটাবেস বানিয়েছি যেখানে ডায়াবেটিস, ক্রনিক রেনাল ডিজিজ, ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ প্রভৃতি তথ্য রাখা হচ্ছে। তার উপর ভিত্তি করেই এই তালিকা বানানো হচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ কারও শরীরে ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, কিন্তু তিনি ঠিকঠাক ডায়েটের মধ্যে রয়েছেন। আর একজন ১০ বছর ধরে ইনসুলিন নিচ্ছেন। তাহলে দু’জনেই ডায়াবেটিসের রোগী হলেও তাঁদের মধ্যে যাঁর অবস্থা বেশি সিরিয়াস তাঁকে আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।”
এই টিকার দাম কীরকম হবে, কিংবা কে সেই দাম দেবে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এইমস প্রধান বলেন, “এই মুহূর্তে এই ভ্যাকসিনের খরচ সরকার দিচ্ছে। কারণ এই টিকাকরণ নিয়ে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে সরকার। তাই আমার মনে হয় টিকার কোনও দাম থাকবে না। বিনামূল্যেই সবাইকে টিকা দেওয়া হবে।”
৬ মাসের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষকে টিকাকরণের কথা বললেও একজনকে ক’টি ডোজ দেওয়া হবে সেটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে গুলেরিয়া বলেন, “সাধারণত দুটি ডোজের মধ্যে ২৮ দিন তফাৎ রাখতে হয়। কিন্তু এর কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। কারণ, ব্রিটেন একটা ডোজ দেওয়ার পরে ২৮ দিন থেকে ৩ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দিচ্ছে। এর ফলে অনেক বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে অনেক বেশি পরিমাণ মানুষ প্রথম ডোজ পেয়ে খানিকটা প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে ফেলতে পারছে। আবার ব্রাজিলেও একই পদ্ধতিতে টিকা দিয়ে দেখা গিয়েছে প্রথম ডোজের থেকে দ্বিতীয় ডোজের সময়ের ব্যবধানের জন্য প্রতিরোধক ক্ষমতায় বিশেষ কিছু তফাৎ হচ্ছে না।”
শনিবার থেকেই দেশের সমস্ত রাজ্যে টিকার মহড়া বা ড্রাই-রান শুরু হয়েছে। বাংলার উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের ইউপিএইচসি ৪, আমডাঙা ও সল্টলেকের দত্তাবাদে টিকার ড্রাই-রান হবে। কীভাবে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে, টিকা দেবেন যাঁরা তাঁদের সে বিষয়ে জ্ঞান কতটা, যদি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় বা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে চটজলদি কী ব্যবস্থা নিতে হবে ইত্যাদির মহড়া চালানো হবে।