ভারতবর্ষে থাকতে গেলে ভারতমাতা বলতে হবে, না হলে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার নিদান দিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। (Hindu Jagaran Manch)
বুধবার মেদিনীপুরের গড়বেতায় হিন্দু ঐক্য সমাবেশে এই ‘নিদান’ দিলেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সংগঠন সম্পাদক তাপস বারিক।
একই মঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের সমালোচনাও করেন তিনি।
আজ গড়বেতার গুঞ্জন সিনেমা হলের মাঠে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, ‘হিন্দু ঐক্য সমাবেশ’ নামে জনসভার আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি হিন্দু জাগরণ মঞ্চের দক্ষিণ বঙ্গের প্রাক্তন সংগঠন সম্পাদক তথা প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
দিলীপ ঘোষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের সম্মান নেই। এখানে মা-বোনেরা ধর্ষিত হচ্ছে। মহিলারা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, কে ওনাকে ক্ষমতা দিয়েছে মা বোনেদের সম্মান নষ্ট করার? সকলকে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব ওনার, কিন্তু তিনি ব্যর্থ। নারী পাচার ও নির্যাতনে পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে। ভয়ে কেন্দ্রকে এইসব রিপোর্ট রাজ্য পাঠায় না। তাই হিন্দু সমাজকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবে না বলে দাবি করেন তিনি।
কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এই হিন্দু ঐক্য সমাবেশ থেকে আরও কড়া ভাষায় হিন্দুত্বের আওয়াজ তোলেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সংগঠন সম্পাদক তাপস বারিক। তিনি বলেন, এই দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ভারত মাতা কী জয় বলতে হবে। তাঁর বক্তব্য, আমরা যেমন মায়ের দুধ খেয়ে বড় হই, একইভাবে দেশের মাটিতে জন্মানো ফসল খেয়ে আমরা জীবন ধারণ করে থাকি, তাই তাকে কেন মা বলা যাবে না?
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বিপ্লবীদের মূলমন্ত্র ছিল বন্দেমাতরম, ভারত মাতা কি জয়। বন্দেমাতরমের সঙ্গে ভারত মাতা কি জয়–এর কোনও পার্থক্য নেই। কংগ্রেস নেতারাও বন্দেমাতরম বলেন। তাহলে কেন ভারত মাতা কি জয় বলা যাবে না? তিনি ফতোয়া দেন, যারা ভারতমাতা বলবে না এবং এদেশের খেয়ে পাকিস্তানের গুনগান করবে তাদের পাকিস্তানে চলে যাওয়াই ভালো।
একই সঙ্গে তিনি লাভ জেহাদ বন্ধের জন্য বিধানসভায় আইন পাসের দাবি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে, তাদের খুন করা হচ্ছে, মন্দির ভাঙ্গছে, বাড়িতে আগুন দিচ্ছে, মেয়েদের তুলে নিয়ে ধর্মান্তরকরণ চলছে। তাঁর অভিযোগ, বাংলাদেশের মতো এখানে একইভাবে লাভ জিহাদ চলছে, বিশেষ করে দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা এবং মুর্শিদাবাদে মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়েছে। এই যুক্তিতে তিনি লাভ জেহাদ বন্ধের জন্য বিধানসভায় আইন পাসের দাবি জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রাক্তন সম্পাদক উত্তম অধিকারী, প্রাক্তন প্রচার প্রমূখ পারিজাত চক্রবর্তী, বর্তমান প্রচার প্রমুখ মলয় মহাজন, নিধি প্রমুখ কুন্তল মজুমদার, জেলা সভাপতি অমিত দত্ত।