রাজ্যে বইছে উন্নয়নের জোয়ার। সেই জোয়ারে ভর করে রাজ্যের সকল লোকসভা আসনে জেতার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল শাসক তৃণমূল। কিন্তু তা সফল হয়নি। ৪২ আসনের মধ্যে ২২টি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ঘাস ফুল শিবিরকে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ৪২ আসনের মধ্যে বেশ কয়েকটি আসন ছিল তৃণমূলের প্রেস্টিজ ফাইট। প্রায় সেই সব কেন্দ্রেই পরাস্ত হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। সেই সকল কেন্দ্রগুলি হল- কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত মালধ এবং মুর্শিদাবাদের সকল কেন্দ্র, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাকপুর এবং বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর।

মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর গড় হিসেবেই পরিচিত। ওই জেলার সব আসনেই ঘাস ফুল ফটানোর পরিকল্পনা করেছিল তৃণমূল। বহরমপুর কেন্দ্র থেকে অধীর চৌধুরীকে হারানোর কথাও বলেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও তা সফল হয়নি। একই সঙ্গে মালদহ জেলার দুই কেন্দ্রও দখলের পরিকল্পনা করেছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।

ওই দুই জেলার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বাম-কংগ্রেস থেকে অনেক বিধায়ক ভাঙিয়ে দলের বহর বাড়িয়েছিলেন তিনি। উত্তর মালদহ কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নুরকে তৃণমূলে নিয়ে আসেন শুভেন্দুবাবু। তাঁকেই ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থীও করা হয়। কিন্তু জিততে পারেননি মৌসম। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের লড়াইয়ের মাঝে ওই কেন্দ্র থেকে জিতে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু। দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রে প্রথমে পিছিয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন কংগ্রেসের ডালু। দুই জেলার মধ্যে কেবল মুর্শিদাবাদ ছাড়া কোনও কেন্দ্রেই জেতেনি তৃণমূল প্রার্থীরা।

বারাকপুর এবং বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের দুই বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং এবং সৌমিত্র খাঁ আগে তৃণমূলের সঙ্গেই ছিলেন। সৌমিত্র খাঁ গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে জিতেও ছিলেন। দলের নেতা দলবদল করে বিরোধী দলের প্রার্থী হয়েছিল। সেই দুই প্রার্থীকে হারানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তৃণমূলের যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বারাকপুরে অর্জুন সিং-কে দুই লক্ষ্য ভোটে হারানোর চ্যলেঞ্জ করেছিলেন অভিষেক। বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর দায়িত্বও নিয়েছিলেন তিনি।

ওই দুই কেন্দ্রেই জয় পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। বিষ্ণুপুর কেন্দ্র থেকে সৌমিত্র খাঁ বিপুল ভোটে জিতেছেন। আদালতের নির্দেশে বাঁকুড়া জেলায় ঢুকতে পারেননি সৌমিত্রবাবু। স্ত্রী সুজাতার প্রচারেই জয় পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে কড়া টক্করের পরে বারাকপুরের দু’বারের সাংসদ দিনেশ ত্রিবেদীকে প্রাস্ত করেছেন অর্জুন সিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.