সামনেই নির্বাচন। ট্রেন ও স্টেশনে নজরদারি বাড়াচ্ছে রেল (Indian Railways)। অপরাধী ও সন্দেহজনক সামগ্রীর উপর নজর রাখতে এবার রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনকে ইন্ট্রিগেটেড সিকিউরিটি সিস্টেমে মুড়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে হাওড়া (Howrah) ডিভিশনের ৩০টি, শিয়ালদহের (Sealdah) ৩১টি, আসানসোলের (Asansol) ২৫টি ও মালদহের (Maldah) ১৫টি স্টেশনকে নির্বাচিত করে কাজ শুরু হচ্ছে। নির্বাচিত স্টেশনগুলিতে বসানো হচ্ছে CCTV। ১৬০ ডিগ্রিতে ঘুরবে এমন আধুনিক ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় স্টেশন গুলিতে হ্যান্ড ব্যাগেজ স্ক্যানারও লাগানো হবে।
জানা গিয়েছে, হাওড়া ডিভিশনের লিলুয়া, শ্রীরামপুর, শেওরাফুলি, চন্দননগর, ব্যান্ডেল, রামপুরহাট, বোলপুর, পাকুড়–সহ বিভিন্ন স্টেশন রয়েছে তালিকায়। শিয়ালদহ ডিভিশনে ৩০টির মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্টেশনগুলির মধ্যে রয়েছে, বারাসত, ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, গেদে, বহরমপুর ইত্যাদি। আসানসোলে নির্বাচিত পঁচিশটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিত্তরঞ্জন, অন্ডাল, রানীগঞ্জ, পানাগড়, কালীপাহাড়ি স্টেশন। মালদহের ভাগলপুর, জামালপুর, সাহেবগঞ্জ, সুলতানগঞ্জ সহ আরও ১২টি স্টেশনে চালু হবে সিকিউরিটি এন্ড সারভাইলেন্স সিস্টেমের এই বিশেষ ব্যবস্থা।
শহরতলি ও দূর শহরের স্টেশনগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে যত শীঘ্র সম্ভব এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে রেল জানিয়েছে। হাওড়ায় DRM সঞ্জয়কুমার সাহা জানান, ‘‘স্টেশনগুলোতে সার্ভে করা হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’ নির্বাচনের আগেই যাতে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে কাজ শেষ করা যায় সেই প্রচেষ্টাই চালাচ্ছে রেল। শিয়ালদহের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার বলেন, ‘‘স্টেশনগুলির গুরুত্ব, যাত্রী সংখ্যা ও কতটা স্পর্শকাতর তা খতিয়ে দেখে কোন স্টেশনে কতগুলো ক্যামেরা, কোথায় লাগানো হবে তা ঠিক হবে। লুকিয়ে রাখা বিস্ফোরক ও অপরাধীদের গতিবিধি চিহ্নিত করা হবে এই প্রযুক্তির দ্বারা।
আধুনিক প্রযুক্তির এই ক্যামেরা সার্কুলেটিং এরিয়া, প্ল্যাটফর্ম এলাকা, পার্সেল এলাকা, ওয়েটিং রুমের যাতায়াতের পথে লাগানো হবে। অপরাধীদের সঙ্গে ট্রেনে যাতায়াতকারী সামগ্রীর উপর নজর রাখবে এই ক্যামেরা। আসানসোলের সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র জানিয়েছেন, পরিকল্পনা মাফিক কাজ চলছে। শেষ হতে পাঁচ মাস সময় লাগবেই। মালদহের RPF কমান্ড্যান্ট রাহুল রাজ বলেন, সীমান্ত এলাকার সঙ্গে সরাসরি বহু স্টেশনের যোগ রয়েছে। ফলে সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলি খুব জরুরী। প্রাথমিক ভাবে এই ডিভিশনের ১৫টি স্টেশনে বসছে ক্যামেরা।
রেলের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই সিসিটিভি ফুটেজ ধরে রাখা হবে সিডিতে। প্রয়োজনে তা খতিয়ে দেখা হবে। অপররাধীদের ধরতে ফেস রিকগনিশন সিস্টেমও রাখা হবে। লকডাউনের আগে তৈরি হয়েছে এই অ্যাকশন প্ল্যান। আগামী ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে ট্রেন ও স্টেশনে সিসিটিভি লাগানোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে রেলবোর্ড। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেল ও এক্সপ্রেসের ৫৮,৬০০ কোচে ও ৬,১০০টি স্টেশনে সিসিটিভি লাগানো হবে। ইতিমধ্যে ভারতে ২৪০টি স্টেশনে এই সিকিউরিটি এন্ড সারভেইল্যান্স সিস্টেম চালু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।