অমিত শাহর চপারেই কলকাতায় এলেন শুভেন্দু, রাতে কৌশল বৈঠক

শুক্রবার রাত দেড়টায় কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তার পর আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকেই নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী নেমে পড়েছেন তিনি। প্রতিটি কর্মসূচিই যথা সময়ে হয়েছে।

অমিত শাহর অভিধানে যেন সময় নষ্ট ব্যাপারই নেই। তৃণমূলের অনেকে জানেন, শুভেন্দু অধিকারীও তেমন। ফলে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর্ব মিটতেই ‘কাজের কাজ’ শুরু করে দিতে চাইছেন দুজনেই।

এদিন সকালে কলকাতা থেকে অমিত শাহর সঙ্গে চপারে মেদিনীপুর পৌঁছেছেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কিন্তু মেদিনীপুর থেকে ফেরার সময়ে চপারে শুভেন্দুকে তুলে নেন অমিত শাহ। অনেকের মতে, সর্বভারতীয় বিজেপি নেতৃত্ব যে তাঁকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তার ইঙ্গিত রয়েছে এতেই।

বিজেপি সূত্রে খবর, আনুষ্ঠানিক ভাবে দলে যোগ দেওয়ার আগে গত কয়েকদিনে চার বার কথা হয়েছে অমিত শাহর। সাংগঠনিক বিষয়, একুশের রণকৌশল ইত্যাদি বিষয়ে তখন কোনও কথা হয়নি। ফোনে তা আলোচনার করার মতো নয়। আজ মুখোমুখি বসে বিস্তারিত আলোচনা করার কথা। শুভেন্দুকে কোনও বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হবে কিনা, প্রচারে কোথায় জোর দেবেন তিনি—সবই সেখানে আলোচনা হবে।

শুভেন্দুও যে কালক্ষেপ করতে চান না এদিনের সভায় তা বোঝাতে চেয়েছেন এই তরুণ নেতা। তিনি বলেছেন, “২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৬ ঘন্টা টাইম দিই। আশ্বস্ত করছি আমাকে বুথে বুথে পাবেন। পাড়ায় পাড়ায় পাবেন”। শুভেন্দু এও বলেন, “শুভেন্দু মাতব্বরি করতে বিজেপিতে আসেনি। শুভেন্দু আপনাদের উপরে খবরদারি করবে না। শুভেন্দু কর্মী হিসাবে আপনাদের সঙ্গে মিলে কাজ করবে। পতাকা লাগাতে বললে লাগাবে। দেওয়াল লিখতে বললে লিখবে”।

উল্লেখযোগ্য হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে এদিন অমিত শাহ কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘ভোট আসতে আসতে আপনি একা পড়ে থাকবেন’। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, এটা স্রেফ কথার কথা নয়। অমিত শাহদের শুভেন্দু ইঙ্গিত দিয়েছেন আরও অন্তত কুড়ি জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছেন। ধাপে ধাপে তাঁদের বিজেপিতে সামিল করা হবে। অর্থাৎ কৌশল হল, আজ শনিবার একটা বড় ধাক্কা দেওয়া হল। এ বার নিয়মিত ভাবে তা চলবে।

তবে একটা বিষয় পরিষ্কার, বিজেপি যে সবাইকে নিতে আগ্রহী তা নয়। আসানসোলের প্রশাসক তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে তাতেই তা প্রমাণিত।

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে শুভেন্দু এখনও পর্যন্ত দিল্লিতে যাননি। তবে বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, শুভেন্দুকে আগে হেস্টিংসে দলের নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রথমে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে। তার পর হয়তো শুভেন্দু একবার দিল্লিতে যাবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হয়তো সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.