ভ্যাক্সিন পেতে যে আর খুব বেশি দেরি নেই, তা এতদিনে অনেকটাই স্পষ্ট। আমেরিকা, লন্ডনের পাশাপাশি ভারতেও ভ্যাক্সিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা অনেকটাই এগিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফেও এবার ভ্যাক্সিন নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেওয়া হল।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্য দেশের ভ্যাক্সিনের মতই ভারতের Covid Vaccine-ও সমান কার্যকরী। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে যে, ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দু’সপ্তাহ পর ইমিউনিটি তৈরি হবে। অন্যান্য ভ্যাক্সিন থেকে কোভিডের ভ্যাক্সিন আলাদা বলেও জানানো হয়েছে।
ভ্যাক্সিন নিয়ে যেসব প্রশ্ন প্রায়শই সামনে আসে, সেসবের উত্তর দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
ভ্যাক্সিন নেওয়া কি বাধ্যতামূলক?
এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র জানিয়েছে, না, এটা ঐচ্ছিক। তবে করোনা (SARS-CoV-2) থেকে সম্পূর্ণভাবে বাঁচতে ভ্যাক্সিন নেওয়া দরকার। এতে পরিবারকেও সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।
তবে ভ্যাক্সিন এখনও পুরোপুরি প্রকাশ্যে আসেনি। Clinical Trials একাধিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে দ্রুত এই ভ্যাক্সিন ভারতে লঞ্চ হবে বলেই জানানো হয়েছে।
মোট ৬ টি ভ্যাক্সিন নিয়ে পরীক্ষা চলছে ভারতে।
১. আইসিএমআর ও ভারত বায়োটেক মিলে বানাচ্ছে এই ভ্যাক্সিন। ২. দ্বিতীয়টি বানাচ্ছে জাইডাস ক্যাডিলা, ৩. তৈরি করছে জেনোভা। ৪. অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিন, যার গবেষণা চলছে সেরাম ইন্সটিটিউটে। ৫. স্পুটনিক ভি, গবেষণা চলছে হায়দরাবাদে ড. রেড্ডি’স ল্যাবে। ৬. আমেরিকার MIT-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে হায়দরাবাদের বায়োলজিক্যাল ই লিমিটেডে গবেষণা চলছে।
রেগুলেটরি বডি সবুজ সংকেত দিলেই টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে। তবে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে বলেই জানানো হয়েছে, যার মধ্যে থাকবে জ্বর, গায়ে ব্যাথা ইত্যাদি।
করোনা প্রতিষেধকের দুটি ডোজের মধ্যে তফাৎ থাকবে ২৮ দিনের। অন্য কোনও অসুখের জন্য ওষুধ খেলেও, করোনা ভ্যাক্সিন নেওয়া যাবে। তবে কারা আগে Covid 19 Vaccine নেবে, সেটা ঠিক করে দেবে কেন্দ্র।
এর আগে ভারতের দুই সংস্থা জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাক্সিন দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।
ভারত বায়োটেক তাদের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকদের ছাড়পত্র পেতে আবেদন করেছিল দেশের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেলের দফতরে। সেন্ট্রাল ড্রাগ রেগুলেটরে অ্যাস্ট্রোজেনেকা-অক্সফোর্ড প্রতিষেধকের ছাড়পত্র পেতে দরবার করেছিল সেরাম। কিন্তু তথ্যের অভাবে জরুরি ছাড়পত্র মঞ্জুর হল না কারও। এর মধ্যে সেরামের প্রতিষেধকের তৃতীয় দফার পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও ভারত বায়োটেকের তাও হয়নি। প্রসঙ্গত, ভারতে ছাড়পত্র পেতে আবেদন করেছে ফাইজার সংস্থাও।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের প্রধান বলরাম ভার্গভ জানিয়েছেন, টিকার উপকার এবং ঝুঁকির অনুপাতে সন্তুষ্ট হলে তবেই এদেশে কোনও সংস্থাকে প্রতিষেধক বাজারে ছাড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং অক্সফোর্ডের প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে অনেক তথ্য কম। এটি ৯০ শতাংশ কার্যকর কি না এবং ৫৫ বছরের বেশি বয়সের শরীরে কতটা কাজ করবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আস্ট্রোজেনেকার গবেষকদের দাবি, পুরো ডোজ দেওয়া হলে ৬২ শতাংশ ক্ষেত্রে কাজ করেছে তাঁদের প্রতিষেধক। এদিকে অর্ধেক ডোজে কাজ করেছে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে। কিন্তু এই পরীক্ষা খুব অল্পসংখ্যক মানুষের ওপর কড়া হয়েছে বলে ভরসাযোগ্য নয়।