১৯৭০ সালে গোপনে বেশ কয়েকজন জন ভারতীয় নৌসেনাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাশিয়ায়। চার মাস ধরে রাশিয়ান ভাষা শেখানো হয়েছিল তাদের। এরপরেই ৪০ জন নৌসেনা অফিসার ও আরও ১৮ জন নৌসেনা জওয়ানকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাশিয়ার সবথেকে বড় নৌবহর ‘ভ্লাদিভসতক’-এ। এটাই নাকি সেইসময় বিশ্বের সবথেকে বড় নৌবহর ছিল।
তাদের হেডকোয়ার্টারেই পাঠানো হয় ওই সেনা জওয়ানদের। প্রশান্ত মহাসাগরের সেই নৌবহর মেরিটাইম মিসাইল ওয়ারফেয়ারেরও হেডকোয়ার্টার ছিল। সেইসময় এটা ছিল অত্যাধুনিক ওয়ারফেয়ার। আটমাসের এক গোপন ট্রেনিং দেওয়া হয় ওই ৪০ জন অফিসারকে। সেই অফিসারদের মধ্যেই ছিলেন মিসাইল অ্যান্ড গানার অফিসার শ্রী রামা রাও গান্দিকোটা। তিনি জানতেন না যে একদিন তাঁর হাতেই তৈরি হবে ইতিহাস।
জানা যায়, সবার অজান্তে আটটি নতুন রাশিয়ান ওসা ক্লাস মিসাইলও যোগ হয়েছিল ভারতীয় নৌবাহিনীতে। যাতে ছিল অত্যাধুনিক “STYNX Anti-Ship Missile”! এর ঠিক পরেই ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করে ভারত। এটাই ছিল ভারত-পাকিস্তানের তৃতীয় যুদ্ধ।
স্থলবাহিনী, নৌসেনা ও বায়ুসেনার তিন প্রধান বসে বৈঠক করে। করাচি পোর্ট জ্বালিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় নৌবাহিনীর প্রধান এস এম নন্দাকে। তখনই কাজে লাগানো হয় ওই নৌসেনাদের। যাদের নাম দেওয়া হয় ‘কিলার স্কোয়াড্রন’। মুম্বই উপকূলের ১৫ নটিক্যাল মাইল দূর থেকে মিসাইল ফায়ারিং শুরু করা হয়।
শ্রী রামা রাও গান্দিকোটাই ছিলেন প্রথম নৌসেনা অফিসার যিনি ভারতের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধজাহাজ থেকে মিসাইলের লঞ্চ বাটনটা টিপেছিলেন। ৭১-এর ৪ ডিসেম্বর করাচির দিকে এগিয়ে যায় কিলার স্কোয়াড্রন। বিদ্যুৎ ক্লাস মিসাইল বোটে ছিল মিসাইল।
ওখার উপকূলে রাখঅ হয়েছিল আইএনএস নিপাত, আইএনএস নির্ঘাত ও আইএনএস বীর। সেই রাতেই ১২টি অ্যান্টিশিপ মিসাইল ছোঁড়ে ভারত। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় করাচি বন্দর। দু’দিন ধরে জ্বলেছিল করাচি নৌবন্দর।