বিধানসভায় এসে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বুধবার বিকেল চারটেয় বিধানসভায় পৌঁছান রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন,সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Assembly Speaker Biman Banerjee) অনুপস্থিতিতে তিনি বিধানসভার সচিব অভিজিৎ সোমের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন। তাঁতে অবিলম্বে তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা ছাড়ার ২ সপ্তাহ পর তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু। গত ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল, শুভেন্দুর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে। গত কয়েক দিন ধরে এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে, এবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন। শেষ পর্যন্ত সেই জল্পনাই সত্যি হল। এদিন ইস্তফা দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। মনে করা হচ্ছে, তিনি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিজেপি-তে যেতে পারেন। যদিও, এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেন সুদীপ।
উল্লেখ্য, গত ২০০৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভা থেকে জয়লাভ করেন। নন্দীগ্রামে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে উঠে আসেন তিনি। ২০০৯ সালে তমলুক থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে শিল্প দফতরের স্থায়ী কমিটির সদস্য হন। ২০১৪ সালেও তমলুক লোকসভা আসনে জয়ী হন শুভেন্দু। কিন্তু ২০১৬ সালে সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করে বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম (Nandigram) থেকে লড়াই করেন। সেখানেও জয়ী হন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর দ্বিতীয় দফার মন্ত্রীসভায় পরিবহণ, সেচ দফতরের মত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়ার পর শুভেন্দু ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর ‘রাজনৈতিক অবস্থান’ জানাবেন বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর। সেই পর্বও এ বার সম্পূর্ণ হল।ফলে শুভেন্দু অধিকারী যে বিজেপিতে যাচ্ছেন বলে রাজ্য জুড়ে যে গুঞ্জন তৈরি হওয়া জল্পনার শীঘ্রই অবসান ঘটতে চলছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে অবশ্য এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি শুভেন্দু অধিকারী। শুধুমাত্র নিজের ইস্তফাপত্র সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেখিয়ে সোজা নিজের গাড়িতে ওঠেন তিনি।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী ইস্তফা দেওয়ার পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তাঁর ইস্তফা পত্র গৃহীত হবে না। কারণ, স্পিকারে সামনের সশরীরে হাজির হয়ে ইস্তফা দিলে কোনও বিধায়ক ইস্তফা গৃহীত হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমনটা করা হয়নি। প্রবীণ তৃণমূল (TMC) সাংসদ সৌগত রায় তাঁর পদত্যাগের পর জানিয়েছেন শুভেন্দু দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাঁর সঙ্গে দলের আর কোনও সম্পর্ক নেই।