করোনা আক্রান্ত কোনও পুরুষ, মহিলাদের থেকে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। সমীক্ষা বলছে কোনও করোনা আক্রান্ত পুরুষের মধ্যে মৃত্যুহার করোনা আক্রান্ত মহিলাদের তুলনায় তিন গুণ বেশি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪টি প্রদেশ ও বিশ্বের ৪৬টি দেশের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সমীক্ষায় ধরা হয়েছে ৩০লক্ষ করোনা আক্রান্ত রোগিকে। পয়লা জানুয়ারি থেকে পয়লা জুনের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন করোনা আক্রান্ত হলে মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা শারীরিক ক্ষতির ঝুঁকি তিন গুণ বেড়ে যায়।
আক্রান্ত হওয়া মহিলাদের তুলনা তিন গুণ বেশি মাত্রায় পুরুষদের আইসিইউতে রাখতে হয়। পুরুষ আক্রান্তের সংখ্যায় ঠিক অর্ধেক বিশ্ব জুড়ে মহিলাদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। বিশেষ শারীরিক গঠনের তারতম্যের জন্য এই পার্থক্য।
সংবাদসংস্থা এএফপিকে দেওয়া তথ্যে গবেষক কেট ওয়েব জানান, লিঙ্গ ভেদে তারতম্য প্রকট হচ্ছে। চিকিৎসকরা এই পার্থক্যই খুঁজে বেড়াচ্ছেন, যে ঠিক কি কারণে মহিলারা কম ঝুঁকিতে রয়েছেন। কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও জানাচ্ছেন বিশ্ব জুড়ে এই ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন করোনায় পুরুষের মৃত্যুর হারও নারীর মৃত্যুর চেয়ে ৩৯ গুণ বেশি। এর কারণ হিসেবে তাঁরা তুলে ধরছেন লিঙ্গভেদে শারীরিক গঠন এবং হরমোনের প্রতিক্রিয়াকে।
গবেষকদের সমীক্ষা বলছে, কোনও মহিলার শরীরে যে টাইপ ১ ইন্টারফেরন প্রোটিনের উৎপাদন বেশি হয়, সেটিই শরীরের ভিতরে ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। মূলত শরীরের স্বাভাবিক দুর্বলতা, যাকে সাইটোকিন স্ট্রম (Cytokine Storm) বলা হয়, তা আটকায় এই প্রোটিন। ফলে মহিলাদের সেভাবে ক্ষতি করতে পারে না করোনা ভাইরাস।
অন্যদিকে পুরুষের শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোন ইমিউনিটিকে সিস্টেমকে দুর্বল করে দেয়, যা নিয়ে বেশ চিন্তায় গবেষকরা। নেচার কমিউনিকেশন নামে এক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের গবেষণা পত্র, যা বেশ সাড়া ফেলেছে।
অবশ্য নারী ও পুরুষের মধ্যে হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসের প্রভাব বেশ এক রকম। বেশিরভাগ হাসপাতালে ভর্তি করোনা আক্রান্তদের কোমর্বিডিটি হওয়ার পিছনে এই দুটি রোগের হাত অবশ্যম্ভাবী। এই গবেষণা ভবিষ্যতে করোনা ভ্যাকসিন পরীক্ষায় কাজে লাগবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পরীক্ষকরা।